সিনিউজ ডেস্ক: সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের যত হাতিয়ার বর্তমানে জনপ্রিয় অনেক সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের সদস্য সংখ্যা বিশ্বের অনেক দেশের জনসংখ্যার চেয়েও বেশি। সামাজিক মিডিয়ার এমন বাড়বাড়ন্ত অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কাছেই সুযোগ এনে দিয়েছে বিপুল সংখ্যক মানুষের কাছে তাদের পণ্য ও সেবাকে পৌঁছে দেয়ার। এ কারণে ফেসবুক, লিংকড্ইন বা টুইটারের ব্যবহারকারীদেরকে টার্গেট করে নানারকম বিপণন পরিকল্পনা আঁটতে শুরু করেছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো। এক্ষত্রে বড় চ্যালেঞ্জটা হচ্ছে বিভিন্ন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং প্লাটফর্মে নিজের উপস্থিতি বজায় রাখা। আর এটি করার জন্যই দরকার হয় সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট টুলের। বেশির ভাগ সামাজিক যোগাযোগ সাইটের জন্যই একটি একক টাচ পয়েন্ট হিসাবে কাজ করবে এসব টুল। একটিমাত্র কনসোল থেকেই একজন মানুষ বিভিন্ন প্লাটফর্মে তাঁর বা তাঁর প্রতিষ্ঠানের কর্মকান্ড মনিটর করতে পারবেন। বর্তমানে প্রচলিত কয়েকটি জনপ্রিয় সামাজিক মিডিয়া ব্যবস্থাপনা টুল নিয়ে এই নিবন্ধে থাকল তথ্যবহুল আলোচনা।
হুটসুইট (Hootsuite)
এটি এমন একটি ওয়েবভিত্তিক টুল যেটিকে সোশ্যাল নেটওয়ার্ক নেটওয়ার্কার অভিধায় ভূষিত করা যায়। একটিমাত্র ম্যানেজমেন্ট কনসোল ব্যবহার করে এর সাহায্যে বিভিন্ন প্লাটফর্মে নিজের বা নিজ প্রতিষ্ঠানের সোশ্যাল মিডিয়া উপস্থিতিকে মনিটর করা যায়। এটিতে ভিন্ন ভিন্ন সামাজিক নেটওয়ার্ককে আলাদা আলাদা স্ট্রিম হিসেবে অ্যাড করা যাবে এবং এগুলো কনসোলের মধ্যে ট্যাবের আকারে দেখা যাবে। এর আরেকটি ভালো দিক হলো, এর মানেজমেন্ট মডিউলের সাহায্যে একটিমাত্র ক্লায়েন্ট থেকে একাধিক নেটওয়ার্কে ইন্টারঅ্যাক্ট করা যাবে। ববহারকারী একাধিক সোশ্যাল নেটওয়ার্ককে মডিউলের মধ্যে অ্যাড করে সবগুলোতেই একযোগে মেসেজ পোস্টিং করতে পারবে। উদাহরণস্বরূপ, হুটসুইটে একবার মাত্র স্ট্যাটাস আপডেট করলেই সেটি যেমন ব্যবহারকারীর টুইটার অ্যাকাউন্টে চলে যাবে, তেমনি একই সঙ্গে লিংকড্ইন ও ফেসবুকের স্ট্যাটাস আপডেট হিসেবেও কাজ করবে। তিনটি সাইটে আলাদা আলাদাভাবে পোস্টিং করার দরকার হবে না। ইন্টারনেট এনাবলড স্মার্টফোনেও হুটসুইটকে ব্যবহার করা যাবে। এছাড়াও ব্যবহারকারী ইচ্ছে করলে প্রয়োজনীয় তথ্যের আরএসএস ফিডও তৈরি করতে পারবেন। সফটঅয়্যারটির চজঙ ভারসন ব্যবহার করে টিম কোলাবরেশনের কাজও করা যাবে। প্রো ভারসনে বিভিন্ন ইউহজারকে অ্যাড করা যাবে যাদের সঙ্গে যুগপৎ যোগাযোগ ও বার্তা প্রেরণ-গ্রহণ করা যাবে। ফাইল শেয়ারিংও এনাবল করা থাকে বলে এর মাধ্যমে দলীয়ভিত্তিক কাজ খুবই চমৎকারভাবে করা যাবে।
জিস্ট (Gist)
জিস্ট মূলত একটি কাস্টমার রিলেশানশিপ মানেজমেন্ট (ঈজগ) টুল। কাস্টমার বা পার্টনারদের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে বিভিন্ন সামাজিক মিডিয়ায় তাদের কর্মকান্ড অনুসরণ করার সুযোগ করে দেয় জিস্ট। জিস্ট ব্যবহার করে আউটলুক, জিমেইল, ওগঅচ ইমেইল সিস্টেম, লিংকিড্ইন, সেলসফোর্স, ফেসবুক, টুইটার এবং সিএসভি-র সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা যায়। ক্রেতা বা পার্টনারদের সঙ্গে জিস্ট ব্যবহার করে যোগাযোগ রক্ষা করা বেশ সহজ। জিস্টের সার্চ বক্সে তাদের নাম টাইপ করার মাধ্যমে ওয়েবের ভুবনে তাদের অবস্থানকে চিহ্নিত করতে হবে। কনটাক্টকে খুঁজে পেলে তার কনটাক্ট ডিটেইলের পাশে একটি ‘হোয়াট’স নিউ’ বক্স দেখা যাবে। ডান দিকে থাকবে কনটাক্টের নামের একটি গুগল সার্চের রেজাল্ট। তার জিমেইল অ্যাকাউন্টকে এর সঙ্গে ইন্টিগ্রেট করা হলে তালিকাভুক্ত কনটাক্টগুলোর সঙ্গে যাবতীয় ইমেইল যোগাযোগের বিবরণও প্রদর্শিত হবে। জিস্ট জিমেইল অ্যাকাউন্ট থেকে ইমেইল বিনিময়, ক্যালেন্ডার টাইম ইত্যাদি বের করে এনে প্রদর্শন করতে পারে। ডোশিয়ে (উড়ংংরবৎ) হচ্ছে প্রতিটি কনটাক্টের সঙ্গে একটি করে লিংক। এটিতে ক্লিক করলে ঐ কনটাক্টের সাম্প্রতিক কর্মকান্ডের সংক্ষিপ্ত একটি বিবরণী দেখা যাবে। কনটাক্টের বিভিন্ন সেকশনের মধ্যে আছে: ঘবংি অনড়ঁঃ ঈড়হঃধপঃ, চড়ংঃং ্ ঞবিবঃং ভৎড়স ঈড়হঃধপঃ, ঊসধরষং নবঃবিবহ ুড়ঁ ধহফ ঈড়হঃধপঃ এবং সবশেষে আছে খরহশং ধহফ অঃঃধপযসবহঃ।
ওয়াইল্ডফায়ার (Wildfire)
ওয়াইল্ডফায়ারএকটি অনলাইন মার্কেটিং টুল। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে ফেসবুক ও টুইটারে ইন্টারঅ্যাকটিভ প্রমোশন তৈরি করা। ওয়াইল্ডফায়ারের বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্র্যান্ড বিভিন্ন সামাজিক মিডিয়ায় নানারকম প্রচার প্রচারণা কার্যক্রম চালাতে পারবে। সহজে ব্যবহারযোগ্য বিভিন্ন ডিজাইন টুল ব্যবহার করে কুইজ, কনটেস্ট, ভার্চুয়াল উপহার ইত্যাদি কর্মকান্ড চালানো যায় ওয়াইল্ডফায়ারের মাধ্যমে। এসব সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ক্যাম্পেইনকে ফেসবুকের ফ্যান পেজ, টুইটার এবং বিপণনকারীর নিজস্ব ওয়েব সাইটে একযোগে প্রকাশ করা সম্ভব। আজকাল বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান টুইটার বা ফেসবুকের মত সাইটগুলোতে নিজেদের ব্র্যান্ড ইমেজকে প্রমোট ও মনিটর করার ব্যাপারে খুবই আগ্রহী। ওয়াইল্ডফায়ার এদিক দিয়ে তাদেরকে নানাভাবে উপকৃত করতে পারবে। এর সোশ্যাল মিডিয়া মনিটর খুব সহজে অন্যের সঙ্গে শেয়ার করা যায়। যে কোনো অ্যানালাইসিস বা পেজকে টুইট করা যাবে বা বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে ভাগাভাগি করা যাবে। আপনি যেসব ব্র্যান্ডকে অনুসরণ করছেন সেগুলোর সাপ্তাহিক অ্যালার্ট সেট আপ করতে পারবেন, আবার আপনার অ্যানালাইসিস থেকে সহজে কোনো ব্র্যান্ডকে বাদ দিতে বা নতুন ব্র্যান্ডকে যুক্ত করতে পারবেন। এখান থেকে যেসব বিশ্লেষণ, চার্ট, গ্রাফ পাবেন সেগুলোকে আপনার ওয়েব সাইটে এমবেড করতেও পারবেন।