বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় আইসিটি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়

সিনিউজ ডেস্ক: বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় আইসিটি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান হুয়াওয় স্থানীয় স্টার্টআপ এবং তরুণদের আইসিটি দক্ষতার বিকাশে  হুয়াওয়ে আজ (১৫ জুন) তিনটি নতুন প্রতিযোগিতা চালু করেছে। প্রোগ্রামগুলো হচ্ছে: আইসিটি ইনকিউবেটর, অ্যাপ ডেভেলপার এবং টেক উইমেন। আজ সকাল সাড়ে ১১টায় রাজধানীর লেকশোর হোটেলে এই তিন প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়।

এ তিনটি প্রোগ্রামই নতুন স্টার্টআপের সূচনা এবং মোবাইল অ্যাপ তৈরির ধারনা বাস্তবায়নে ডিজাইন করা হয়েছে। এর মধ্যে, আইসিটি ইনকিউবেটর প্রতিযোগিতাটি স্টার্টআপের ওপর আলোকপাত করবে। এ প্রতিযোগিতাটি দু’টি ভাগে বিভক্ত – আইডিয়া পর্যায় এবং সূচনা পর্যায় (আর্লি স্টেজ)। হুয়াওয়ে আয়োজিত আইসিটি ইনকিউবেটর প্রতিযোগিতায় স্ট্রাটেজিক পার্টনার হিসেবে রয়েছে আইডিইএ এবং স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড।

আইসিটি ইন কিউবেশন প্রতিযোগিতার আইডিয়া স্টেজ এবং আর্লিস্টেজ, উভয় ক্ষেত্রে বিজয়ীরা পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত প্রাইজ মানি পাবেন।স্টার্টআপের প্রধান নির্বাহী রাবি দেশে সফল স্টার্টআপের কার্যক্রম পরিদর্শনের সুযোগ পাবেন এবং সর্বোচ্চ একলাখ ২৫ হাজার মার্কিন ডলার সমমূল্যের হুয়াওয়ে ক্লাউড ক্রেডিট পাবেন।প্রথম এবং দ্বিতীয় রানার আপ  পাবেন যথা ক্রমে সর্বোচ্চ তিন লাখ ও এক লাখ টাকা পর্যন্ত প্রাইজ মানি।প্রথম এবং দ্বিতীয় রানার আপ স্টার্টআপ গুলোর প্রধান নির্বাহীরাও বিদেশে সফল স্টার্টআপের কার্যক্রম পরিদর্শনের সুযোগ পাবেন; সাথে পাবেন ৮০হাজার মার্কিন ডলার মূল্যের হুয়াওয়ে ক্লাউড ক্রেডিট।

অন্য দুটি প্রতিযোগিতার এককভাবে আয়োজন করছে হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেড। হুয়াওয়ে অ্যাপ ডেভেলপার এবং হুয়াওয়ে টেক উইমেন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। একটি দলে সর্বোচ্চ দুই সদস্য থাকতে পারবে। র প্রতিযোগিতায় ৩.০ এর ওপরে সিজিপিএ সহ যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বা চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরা আবেদন করার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। হুয়াওয়ে টেক উইমেন প্রোগ্রামটিতে শুধু নারীরা অংশগ্রহণ করতে পারবেন। অন্যদিকে, হুয়াওয়ে অ্যাপ ডেভেলপার প্রোগ্রামে নারী-পুরুষ উভয়ই অংশগ্রহণ করতে পারবেন।

অ্যাপডেভেলপারএবংহুয়াওয়েটেকউইমেনপ্রতিযোগিতারবিজয়ীপাবেন৩লাখটাকাপর্যন্তপ্রাইজমানি; পাশাপশি, তারাবিশ্বব্যাপীসফলঅ্যাপডেভেলপারদেরসাথেদেখাকরারওসুযোগপাবেনএবং৫হাজারমার্কিনডলারপর্যন্তহুয়াওয়েক্লাউডরিসোর্সপাবেন।প্রথমএবংদ্বিতীয়রানারআপপাবেনযথাক্রমেসর্বোচ্চদুইওএকলাখটাকাপ্রাইজমানিএবংতিনহাজারওদুইহাজারমার্কিনডলারেরক্লাউডরিসোর্স।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি এবং হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের সিইও প্যান জুনফেং।

হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের সিইও প্যান জুনফেং-এর স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর, মূল বক্তব্য পেশ করেন ইসিই’র (চুয়েট) ডিন ও আইইইই বাংলাদেশ সেকশনের চেয়ার অধ্যাপক ড. এম. মশিউল হক। তারপরে অনুষ্ঠানের সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরা হয় এবং বক্তব্য রাখেন সেবা প্ল্যাটফর্ম লিমিটেড’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সিওও ইলমুল হক সজীব, ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি’র উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, আইডিইএ প্রজেক্টের প্রকল্প পরিচালক মো. আলতাফ হোসেন এবং স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি আহমেদ।

অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, “ডিজিটাল সমাজ, জ্ঞনাভিত্তিক অর্থনীতি এবং উদ্ভাবনী বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য আমাদের একটা স্টার্টআপ কমিউনিটি তৈরি করতে হবে। সেই বিষয়টাকে এগিয়ে দিতে এই প্রতিযোগিতা গুলোর মাধ্যমে চমৎকার একটা পার্টনারশিপ মডেল হুয়াওয়ে গড়ে তুলেছে। মোবাইল এ্যাপ ডেভেলপারদের জন্য, আইসিটি ক্ষেত্রে নারীদের জন্য যে বিশেষ এই আয়োজন হুয়াওয়ে তৈরি করেছে সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ আছেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত স্টার্টআপরা আছেন, মেন্ট্রররা আছেন, বিশ্বের শীর্ষ স্থানীয় প্রযুক্তি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে হুয়াওয়ে নিজেই আছে, এবং সর্বপোরি আমি বাংলাদেশ সরকার থেকে প্রতিনিধিত্ব করছি।”

হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী প্যান জুনফেং বলেন, “আইসিটি ইনকিউবেটর প্রাথমিক পর্যায়ের স্টার্টআপ এবং আইডিয়া-স্টেজে থাকা স্টার্টআপগুলোকে  সহায়তা করে প্রত্যেকের জন্য একটি কার্যকরী এবং টেকসই স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম গড়ে তুলবে। এ উদ্যোগটি নতুন দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে ইইই, ইসিই ও সিএসই বিভাগের তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের বিদ্যমান দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করবে। এ প্রোগ্রামটি দেশের নারীদের (যারা প্রযুক্তি-বিষয়ক খাতে কর্মরত আছেন কিংবা প্রযুক্তি বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করছেন) প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়ার ওপরও আলোকপাত করবে। এ প্রোগ্রামগুলোর মাধ্যমে সবাই সুবিধা লাভ করবে বলে আমি প্রত্যাশা করছি।”

চুয়েটের ইসিই বিভাগের ডিন এবং আইইইই বাংলাদেশ সেকশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. এম. মশিউল হক বলেন, “আমাদের তরুণ প্রজন্ম ও মেধাবীদের জন্য একটি উদ্ভাবনী প্ল্যাটফর্মের বিকাশে হুয়াওয়ে অ্যাপ ডেভেপলার, টেক উইমেন ও আইসিটি ইনকিউবেটর প্রোগ্রামগুলো অত্যন্ত সময়োপযোগী সব উদ্যোগ। আমার বিশ্বাস, তরুণদের মেধার বিকাশে উদ্ভাবনী এসব উদ্যোগ সুদূরপ্রসারী ভূমিকা রাখবে এবং তাদের দক্ষতা অর্জনে ও স্বীকৃতিদানের মাধ্যমে সৃষ্টিশীলতা বিকাশের সুযোগ তৈরি করবে।”

এ নিয়ে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি এর উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, “বিগত কয়েক বছর ধরে হুয়াওয়ে তরুণদের বিকাশে বেশ কিছু ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলে আমি দেখতে পেয়েছি। যেমন: হুয়াওয়ের আইকনিক সিডস ফর দ্য ফিউচার প্রোগ্রামটিতে শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে বিভিন্ন জ্ঞান আহরণ ও এর মাধ্যমে তাদের জীবনে যে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে তা আমি দেখতে পেয়েছি। এ তিনটি প্রোগ্রামের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নতুন দক্ষতা রপ্ত করতে পারবেন; একইসঙ্গে তারা তাদের অর্জিত দক্ষতা প্রদর্শনেরও সুযোগ পাবেন।”

সেবা প্ল্যাটফর্ম লিমিটেডের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সিওও ইলমুল হক সজীব বলেন, “গত দুই বছরে আমরা দেখেছি আইসিটি খাত কীভাবে জিডিপি’তে অবদান রেখেছে এবং সঙ্কটের সময়েও প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে ভূমিকা রেখে চলেছে। তাই, আমাদের এ খাত নিয়ে আরও কাজ করতে হবে। আমি মনে করি, এ উদ্যোগ আইসিটি খাতের প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখবে এবং এ খাতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।”

আগ্রহী প্রার্থীরা এই প্রোগ্রামগুলোতে অংশগ্রহণ করতে ১৫ই জুন থেকে আগামী ৩০ জুনের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশন করতে ভিজিট করুন – https://hibator.com/

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।