স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমে বিনিয়োগ করবে হুয়াওয়ে

সিনিউজ ডেস্ক:স্টার্টআপ কোম্পানি ও সংস্থা সমূহের সহায়তায় ১০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে হুয়াওয়ে। সম্প্রতি সিঙ্গাপুর ও হংকং- এ একযোগে অনুষ্ঠিত হওয়া স্পার্ক ফাউন্ডার্স সামিটেরর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ পরিকল্পনার কথা জানায় প্রতিষ্ঠানটি। তারা আরও জানায়, এ বিনিয়োগটি হবে তাদের স্পার্ক প্রোগ্রামের মাধ্যমে, যার লক্ষ্য হবে আগামী তিন বছরে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে একটি টেকসই স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম তৈরি করা।

 

হুয়াওয়ে ২০২০ সাল থেকে সিঙ্গাপুরকে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রথম স্টার্টআপ হাব তৈরিতে সহায়তা করে আসছে এবং গত এক বছরে এ অঞ্চলের অনেক দেশেই এ কর্মসূচি সম্প্রসারণ করেছে। সামিটে হুয়াওয়ে ঘোষণা করেছে যে, তাদের এ কর্মসূচিটি ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, শ্রীলঙ্কা ও ভিয়েতনামে চারটি অতিরিক্ত স্টার্টআপ হাব গড়ে তোলার দিকে আলোকপাত করবে; যার লক্ষ্য হবে স্পার্ক এক্সিলারেটর প্রোগ্রামে মোট ১ হাজার স্টার্টআপ নিযুক্তকরণ করা, যার মধ্যে ১শ’টি  স্টার্টআপ হবে স্কেলআপ।

 

অনুষ্ঠানে হুয়াওয়ে স্টার্টআপ-সম্পর্কিত আরও তিনটি উদ্যোগ চালু করে। সেগুলো হলো: দ্য স্পার্ক ডেভেলপার প্রোগ্রাম, যার লক্ষ্য হলো এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে হুয়াওয়ে ক্লাউড দ্বারা চালিত একটি ডেভেলপার ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে সহায়তা করা; দ্য স্পার্ক পিটস্টপ প্রোগ্রাম, যা পণ্য উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে হুয়াওয়ে ক্লাউডে অনবোর্ড ও স্টার্টআপগুলোকে সহায়তার জন্য তৈরি করা হয়েছে; এবং দ্য স্পার্ক ইনোভেশন প্রোগ্রাম (এসআইপি), যা স্পার্ক স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমের মাধ্যমে এন্টারপ্রাইজ উদ্ভাবনকে সহজতর করতে সহায়তা করে।

 

স্পার্ক ফাউন্ডার্স সামিটে এশিয়ার স্বনামধন্য স্টার্টআপ, অ্যাকাডেমিয়া, বিভিন্ন খাত ও সরকার এবং মিডিয়ার প্রতিনিধিরা সহ ৫০ জনেরও বেশি আঞ্চলিক ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট এবং ৩শ’টিরও বেশি স্টার্টআপের প্রতিষ্ঠাতাগণ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমের সামাজিক মূল্য এবং স্থানীয় কমিউনিটিতে অবদান রাখার ক্ষেত্রে এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে স্টার্টআপ কীভাবে প্রযুক্তিগত ও ইকোসিস্টেম উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করতে পারে সে ব্যপারে আলোচনা করা হয়েছে।

 

হুয়াওয়ের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বোর্ড সদস্য ক্যাথরিন চেন সামাজিক অগ্রগতির জন্য স্টার্টআপের গুরুত্ব এবং স্টার্টআপের সহায়তায় হুয়াওয়ে কী করছে তা জানিয়ে সামিটের আলোচনার সূচনা করেন। তিনি বলেন, “আমরা সবাই জানি স্টার্টআপ ও এসএমই কতোটা গুরুত্বপূর্ণ। এরা আমাদের যুগের উদ্ভাবক, পরিবর্তনকারী এবং পথিকৃৎ। বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশ কর্মসংস্থানই এ প্রতিষ্ঠানগুলোতে; এরা দুই-তৃতীয়াংশ নতুন চাকরির সুযোগ তৈরি করে এবং বৈশ্বিক জিডিপির প্রায় ৫০ শতাংশ এখান থেকেই আসে। ৩৪ বছর আগে হুয়াওয়ে ছিল মাত্র ৫ হাজার ডলারে নিবন্ধিত মূলধনের একটি স্টার্টআপ। সম্প্রতি, আমরা ভাবছি কিভাবে আমরা আমাদের অভিজ্ঞতা ও রিসোর্স দিয়ে আরও স্টার্টআপের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহায়তায় করতে পারি। এতে তারা ডিজিটাল রূপান্তরের মাধ্যমে তৈরি হওয়া সুযোগগুলোকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসায়িক সাফল্য অর্জন এবং বিশ্বের জন্য আরও উদ্ভাবনী পণ্য ও সমাধান বিকাশে কাজ করতে পারবে।”

 

হুয়াওয়ের ক্লাউড বিজনেস ইউনিটের সিইও ঝ্যাং পিং’আন বলেন, “২০১৭ সালে যাত্রা শুরুর পর থেকে হুয়াওয়ে ক্লাউড বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল ক্লাউড; এটি অগণিত স্টার্টআপের প্রবৃদ্ধিকে চালিত করেছে। গত বছর আমরা এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে স্পার্ক প্রোগ্রাম চালু করেছি। এ কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা স্থানীয় সরকার, নেতৃস্থানীয় ইনকিউবেটর, সুপরিচিত ভিসি ফার্ম এবং শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে কাজ করে অনেক অঞ্চলে স্টার্টআপের জন্য সহায়তা প্ল্যাটফর্ম তৈরি করছি। এখন আমাদের কর্মসূচিতে ৪০টি স্টার্টআপ অংশগ্রহণ করছে।”

 

হুয়াওয়ে এশিয়া প্যাসিফিকের প্রেসিডেন্ট জেফারি লিউ বলেন, “গত দুই দশক ধরে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য আমাদের  প্রতিশ্রুতি অপরিবর্তিত রয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “হুয়াওয়ের গ্লোবাল কাস্টমার বেস ও ফুল-স্ট্যাক টেকনোলজিকে কাজে লাগিয়ে স্পার্ক প্রোগ্রাম আগামী তিন বছরে এ অঞ্চলে ১০ কোটি মার্কিন ডলারেরও বেশি বেশি বিনিয়োগ করবে এবং একটি টেকসই স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম নির্মাণে ও ডায়নামিক অঞ্চলের জন্য নতুন মান তৈরি করতে সামগ্রিক সহায়তা প্রদান করবে।”

 

হুয়াওয়ে স্টার্টআপকে সামাজিক মূল্যবোধ তৈরি ও বিশ্বব্যাপী কমিউনিটিতে অবদান রাখার ক্ষেত্রে মূল অংশীদার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। স্পার্ক ফাউন্ডার্স সামিটে হুয়াওয়ে স্টার্টআপগুলোর সাথে এর উদ্ভাবনী গবেষণা কর্মসূচির সর্বশেষ তথ্য প্রকাশ করেছে। গবেষণার তথ্যে হুয়াওয়ে ও এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ২ হাজারেরও বেশি অংশীদারদের মধ্যে দৃঢ় সম্পর্ক দৃশ্যমান হয়েছে। এতে সরকার, শীর্ষস্থানীয় ভিসি এবং হংকং ও সিঙ্গাপুরের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাথে ঘনিষ্ঠ অংশীদারিত্বের সহায়ক প্ল্যাটফর্ম তৈরির চলমান উদ্যোগগুলোও উঠে এসেছে।

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।