বাংলাদেশ ইনোভেশন কনক্লেভের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে সাইবার সিকিউরিটি সামিট ২০২৪

সিনিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশ ইনোভেশন কনক্লেভের উদ্যোগে গত মঙ্গলবার, ০৫ মার্চ রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়েছে গ্রামীনফোন নিবেদিত বাংলাদেশ সাইবার সিকিউরিটি সামিট ২০২৪। লিঙ্ক৩ টেকনোলজিস লিমিটেড এবং আইডিয়া ফাউন্ডেশন এর সঞ্চালনায়, বিকাশ লিমিটেডের সম্পৃক্ততায় এবং স্মার্ট বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক এর সহযোগিতায় আয়োজিত এই সামিটটির আয়োজক হিসেবে ছিলো বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম।  দিনব্যাপী সামিটে উপস্থিত ছিলেন দেশের ব্যবসায়, উন্নয়ন, প্রযুক্তি, ব্যাংকিং ও ফিন্যান্স খাতের দেশের শীর্ষ সাইবার সিকিউরিটি বিশেষজ্ঞরা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তারা সহ পলিসি বিশেষজ্ঞ এবং সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে আগ্রহী দেশ-বিদেশের আরও অনেকে।

এই বছর, সামিটটি সাজানো হয়েছে মূলত “সাইবার রেজিলিয়েন্স ফর বাংলাদেশ” এই রূপকল্প মাথায় রেখে। আয়োজনটির অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশের সাইবার নিরাপত্তার বিভিন্ন সমস্যা এবং সুযোগগুলো অন্বেষণ করা এবং বাংলাদেশের ডিজিটাল ভবিষ্যতের জন্য বিনিয়োগ করছে এমন সরকারী ও বেসরকারি সংস্থা, শিল্প, সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ এবং পৃষ্ঠপোষকদের মধ্যে সহযোগিতা এবং গঠনমূলক সংলাপ করার একটি প্ল্যাটফর্ম প্রদান করা।

আয়োজনটিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি । এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক মুখ্য সচিব মো: আবুল কালাম আজাদ, এমপি, ভাইস চেয়ারম্যান, আইডিয়া ফাউন্ডেশন; কো-চেয়ারম্যান, স্মার্ট বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক।

সামিটটি ৪টি কিনোট সেশন, ২টি প্যানেল ডিসকাশন, ৪টি ইনসাইট সেশন, ১টি কেস স্টাডি, এবং ১টি পলিসি ডায়লগের সমন্বয়ে একটি আকর্ষণীয় এজেন্ডা তুলে ধরেছে। এই আলোচনাগুলো দেশের সাইবার নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় কাঠামো তৈরির বিষয়বস্তু এবং নীতি পরামর্শ উত্থাপন করেছে।

গ্রামীণফোনের চিফ ইনফরমেশন অফিসার নিরঞ্জন শ্রীনিবাসন দ্রুত ডিজিটাইজেশনের প্রেক্ষাপটে সাইবার সিকিউরিটির গুরুত্ব এবং স্মার্ট বাংলাদেশের রূপকল্পের ওপর জোর দিয়ে সামিটের সূচনা করেন। তিনি বলেন, “৮২ মিলিয়নেরও বেশি গ্রাহককে সেবা প্রদানের মাধ্যমে, গ্রামীণফোন প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে ডেটা সুরক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে। আমরা এই প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, শক্তিশালী অবকাঠামো এবং উন্নত ডেটা সুরক্ষা ব্যবস্থাগুলিতে উল্লেখযোগ্যভাবে বিনিয়োগ করেছি। উপরন্তু, আমাদের ফ্ল্যাগশিপ ডিজিটাল চ্যানেল, মাইজিপি, আইওটি পণ্য, অ্যাপ আলো এবং ” অ্যাপসিটি” সহ আমাদের ডেটা সেন্টারগুলি একটি স্মার্ট ডেটা সুরক্ষা কাঠামোর মধ্যে কাজ করে।”

উদ্বোধনী বক্তৃতায় বাংলাদেশ ইনোভেশন কনক্লেভের প্রতিষ্ঠাতা এবং বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরিফুল ইসলাম বলেন, “ আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প অর্জন করেছি। এখন, আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে এই ডিজিটাল অভিজ্ঞতাকে সকল সেক্টরের জন্য কার্যকর ও নিরাপদ করা। সাইবার নিরাপত্তা বর্তমানে বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জ হওয়ার পাশাপাশি একটি সুযোগও। আমাদের পূর্বের অভিজ্ঞতা জানায় যে, একটি জাতি হিসাবে আমরা সবসময় চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেছি এবং সুযোগের সেরা ব্যবহার করেছি। আজ এখানে আমরা সকলে একত্রিত হয়েছি সাইবার সেবায় নিরাপদ একটি বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য। আমি বিশ্বাস করি আমরা সম্মিলিতভাবে উদ্ভাবনী সমাধান এবং টেকসই ফলাফল নিশ্চিত করে আমাদের লক্ষার্জনে সক্ষম হবো ।”

প্রধান অতিথি, জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি তার বক্তৃতায় সাইবার নিরাপত্তার গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং এই উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, “স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১ প্রতিষ্ঠার পথে সাইবার নিরাপত্তা একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। আমি আমাদের ডিজিটাল রূপান্তর

 

যাত্রার একটি মৌলিক স্তম্ভ হিসাবে সাইবার নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য – সরকারী সংস্থা, শিল্প নেতা, সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ এবং দেশের নাগরিকদের এবং এই যাত্রায় জড়িত সকল প্রতিষ্ঠানকে অনুরোধ করছি।

মো. আবুল কালাম আজাদ, এমপি, বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, “আমাদের স্মার্ট বাংলাদেশে যাত্রায়, প্রযুক্তিগত অগ্রগতি এবং সাইবার নিরাপত্তা উভয়ই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের অগ্রগতি সুরক্ষিত করা শুধু অপরিহার্য নয়; এটি আমাদের স্মার্ট বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়নের ভিত্তি। আসুন একসাথে, আমাদের সাইবার প্রতিরক্ষাকে অগ্রাধিকার দিই এবং শক্তিশালী করি। আমাদের দেশের সমৃদ্ধির জন্য একটি নিরাপদ ডিজিটাল ভবিষ্যত নিশ্চিত করি।”

সামিটের বিভিন্ন আলোচনায় বাংলাদেশের আর্থিক খাতে সাইবার নিরাপত্তাজনিত হুমকি, গুরূত্বপূর্ণ অবকাঠামোর জন্য বাংলাদেশে সাইবার নিরাপত্তার অবস্থা এবং বাংলাদেশের পরিবর্তনশীল সাইবার নিরাপত্তা নীতির মতো বহুমুখী এবং সময়োপযোগী বিষয়গুলো উঠে আসে।

সামিটে কিনোট স্পিকার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন: মেজর ভিনিত কুমার, ফাউন্ডার এন্ড প্রেসিডেন্ট, সাইবারপিস ফাউন্ডেশন; এ.এস.এম. শামীম রেজা, চিফ টেকনোলজি অফিসার, পাইপলাইন ইনক; হাবিবুল্লাহ এন করিম, ফাউন্ডার এন্ড সিইও, টেকনোহেভেন কোম্পানি লিমিটেড; এবং আনোয়ার এস. কাজী, সিআইএসএ, সিআইএসএসপি, এসভিপি এন্ড ডিরেক্টর, কর্পোরেট ইনফরমেশন, সিকিউরিটি, কিকর্প, ইউএসএ।

এছাড়াও সামিটের অন্যান্য সেশনের আলোচনায় যুক্ত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের মাননীয় সচিব মোঃ সামসুল আরেফিন; আবু সাঈদ মোঃ কামরুজ্জামান এনডিসি, ডিরেক্টর জেনারেল, জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি; সায়েদা সিলমা তামানিনা, ম্যানেজিং পার্টনার, খান তামানিনা এন্ড কোং; ব্যারিস্টার-অ্যাট-ল অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট; রব স্টলম্যান, প্রজেক্ট ম্যানেজার পার্টনারশিপস ফর এ টলারেন্ট ইনক্লুসিভ বাংলাদেশ; ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ, কমিশনার, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন; হুসাইন এ সামাদ, লিড রিসার্চার, আইডিয়া ফাউন্ডেশন এন্ড কনসালটেন্ট, দি ওয়ার্ল্ড ব্যাংক; এ কে এম নাজমুল করিম, এভিপি এন্ড হেড অব আইটি গভর্নেন্স বিকাশ লিমিটেড এবং অন্যান্য।

গ্রামীনফোনের সৌজন্যে সাইবার সিকিউরিটি সামিট ২০২৪ এর আয়োজনে ছিলো বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম। এছাড়াও  উদ্যোগটির সঞ্চালনায় ছিলো লিঙ্ক৩ টেকনোলজিস লিমিটেড এবং আইডিয়া ফাউন্ডেশন, সম্পৃক্ততায় বিকাশ লিমিটেড এবং সহযোগিতায় স্মার্ট বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক। আয়োজনটির সহায়তায় ছিলো সামিট কমিউনিকেশনস লিমিটেড; ইউসিবি স্টক ব্রোকারেজ লিমিটেড; এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই); জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি এবং বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড। স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার-: ন্যামকোন; এবং পিআর পার্টনার – ব্যাকপেজ পিআর। বাংলাদেশ সাইবার সিকিউরিটি সামিট ২০২৪, বাংলাদেশ ইনোভেশন কনক্লেভের একটি উদ্যোগ।

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।