সিনিউজ ডেস্ক:করোনা মহামারির সময় যখন হাসপাতালে মিলছিলোনা পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা তখনি মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে স্বাস্থ্য বাতায়ন। দেশের দূযোগ কালে বহুমাত্রিক ডিজিটাল সেবা পৌঁছে দেওয়ায় “এসোসিও (ASOCIO) হেলথটেক অ্যাওয়ার্ড ২০২১” পেয়েছে বাংলাদেশের প্রথম সারির আইটি প্রতিষ্ঠান সিনেসিস আইটি লিমিটেড। WITSA আয়োজিত এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, আইসিটি ডিভিশনের সহায়তায় বঙ্গবন্ধু ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে ১১ নভেম্বর থেকে ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত চলছে এবছরে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় আইসিটি সম্মেলন “ডব্লিউ সি আইটি (WCIT) ২০২১”। ১২ নভেম্বর ডব্লিউ সি আইটি’র সম্মেলনে এই পুরষ্কার প্রদান করা হয়।
সিনেসিস আইটি’র পক্ষ থেকে এই এসোসিও হেলথটেক অ্যাওয়ার্ড ২০২১ গ্রহণ করেন সিনেসিস আইটি’র ম্যনেজিং ডিরেক্টর সোহরাব আহমেদ চৌধুরী। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সিনেসিস আইটি’র ডিরেক্টর আব্দুর রশিদ এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার ও টিম লিড, মার্কেটিং এন্ড প্রোডাক্ট ইনোভেশন, কাজী আব্দুল্লাহ আল মামুন।
পুরস্কারটি প্রদান করেন, এসোসিও এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ভাইস চেয়ারম্যান জন চৈ, আইটি এন্ড ডিজিটাল ব্যুরো এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং চেয়ারম্যান বুনরাক সারাগ্গানন্দ, জান এসোসিয়েটস লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল্লাহ কাফি, এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি’র চেয়ারম্যান শহীদ-উল-মুনীর।
এশিয়ান-ওশেনিয়ান কম্পিউটিং ইন্ডাস্ট্রি অর্গানাইজেশন (ASOCIO) একটি আইসিটি ফেডারেশন, যেটি ১৯৮৩ সালে এশিয়া ও ওসেনিয়া অঞ্চলের ২৪টি দেশের ন্যাশনাল আইসিটি এসোসিয়েশনস-এর সমন্বয়ে ‘এএসওসিআইও গঠিত হয়। প্রতিষ্ঠানটি প্রতিবছর ৪টি ক্যাটাগরিতে এ্যাওয়ার্ড প্রদান করে থাকে।
সিনেসিস আইটির ম্যনেজিং ডিরেক্টর সোহরাব আহমেদ চৌধুরী এই সম্মাননা প্রাপ্তি নিয়ে বলেন, “সিনেসিস আইটি লিমিটেড, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর সহযোগিতায় ২০১৫ সাল থেকে এই মোবাইল ভিত্তিক টেলিহেলথ সার্ভিস সেন্টার স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ এর মাধ্যমে বাংলাদেশের নাগরিকদের সেবা দিয়ে আসছে। দেশে বিভিন রোগের প্রাদুর্ভাবের সময় স্বাস্থ্য বাতায়ন সর্বদা বাংলাদেশ সরকারকে সাহায্য করেছে। শুধুমাত্র এই কোভিড মহামারী পরিস্থিতিতে, স্বাস্থ্য বাতায়ন প্রায় ১ কোটি ৩০ লক্ষ মানুষকে পরিষেবা সরবরাহ করেছে যেখানে প্রায় ৯০% পরিষেবাগুলি কোভিড-১৯ সমস্যা সম্পর্কিত ছিল। সিনেসিস আইটি এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আমাদের এই মহৎ উদ্যোগকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি এবং ASOCIO কে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। সর্বশেষে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই স্বাস্থ্য বাতায়নের সকল ডাক্তারবৃন্দকে যারা শুরু থেকেই অবিরাম এবং আবেগের সাথে রাত দিন এই মহৎ সেবা প্রদান করে আসছে।
দেশের জনগণের দ্বারগোড়ায় ডিজিটাল স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে ২০১৬ সালে আনুষ্ঠানিক ভাবে যাত্রা শুরু করে জাতীয় স্বাস্থ্য সেবার কল সেন্টার “স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩”। সূচনা থেকে এই পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি ৯০ লক্ষ মানুষের কাছে স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে স্বাস্থ্য বাতায়ন। এছাড়াও দেশে যখনই স্বাস্থ্য সেবার চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে তখনি স্বাস্থ্য বাতায়ন মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে ডিজিটাল হাসপাতালের মতো কাজ করে গিয়েছে। শুধুমাত্র করোনা মহামারির এই সময়েই স্বাস্থ্য বাতায়ন থেকে প্রায় ১ কোটি ৩০ লক্ষ মানুষকে সেবা প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য, স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ ছাড়াও সিনেসিস আইটি দেশের ই-স্বাস্থ্য খাতে বরাবরই অবদান রেখে গিয়েছে। ২০১৬ সালে সিনেসিস আইটির নিজেস্ব সেবা এবং বাংলাদেশের সর্বপ্রথম মোবাইলের মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্য সঙ্ক্রান্ত সেবা “মাইন্ড টেল” চালু করা হয়। যা পরবর্তীতে ২০১৭ সালে জাতীয় আইসিটি এওয়ার্ড লাভ করে। এছাড়াও, ২০২০ সালে করোনা মোকাবেলায় চালু হয় কোভিড-১৯ টেলি-হেল্থ সেন্টার, যার মাধ্যমে ৩ লক্ষের বেশি করোনা আক্রান্ত রোগীকে সেবা প্রদান করা হয় এবং এখনও সেবা প্রদান করা হচ্ছে। এই সেবাটি আইসিটি খাতে বিশ্বের অন্যতম পুরস্কার উইটসা (WITSA) গ্লোবাল আইসিটি অ্যাওয়ার্ড লাভ করে ২০২০ সালে। তাছাড়াও, করোনাকালীন সময়ে গর্ভবতী মা ও শিশুর চিকিৎসা সহায়তার লক্ষে প্রতিষ্ঠিত হয় মা টেলি-হেল্থ সেন্টার এবং প্রবাসী বাঙালীদের জন্য প্রবাস বন্ধু কল সেন্টার। শুধু তাই নয়, সিনেসিস এবং এটুআই এর উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত করা হয় এশিয়ায় প্রথম তিন ধাপ বিশিষ্ট বিশেষায়িত কল সেন্টার। এসকল সেবার পাশাপাশি আরও রয়েছে সুখী পরিবার ১৬৭৬৭, সেনা স্বাস্থ্য সেবা, ডাক্তার বলছি সহ আরও বেশ কিছু ডিজিটাল স্বাস্থ্য সেবা। সর্বোপরি ডিজিটাল স্বাস্থ্যখাতে অনবদ্য অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান হিসেবে সিনেসিস আইটিকে “ডিজিটাল বাংলাদেশ পুরস্কার-২০২০” সম্মাননায় ভূষিত করে।