সিনিউজ ডেস্ক: সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও অক্টোবর মাস জুড়ে সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মসূচি আয়োজন করা হয়। তারই অংশ হিসেবে আজ শনিবার (২১ অক্টোবর) বিরুলিয়া সাভারে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিতে দিনব্যাপী ‘সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা দিবস-২০২৩’ উদযাপন করা হয়। বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আয়োজনে ড্যাফোডিল স্মার্ট সিটির ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স হলে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. এম লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ মাহফুজুল ইসলাম ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম মাহবুব উল হক মজুমদার। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. সৈয়দ আকতার হোসেন। বিটিআরসি’র কমিশনার ড. মুশফিক মান্নান চৌধুরী সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক সেমিনার, প্রশিক্ষণ কর্মশালা, প্যানেল আলোচনা, গুগল হ্যাকাথন কনটেষ্ট, সাইবার সিকিউরিটি সচেতনতা প্রজেক্ট পদর্শনী এবং ক্যাপচার দ্য ফ্ল্যাগ প্রতিযোগিতা। এই প্রতিযোগিতায় সারা দেশ থেকে শতাধিক দল অংশ গ্রহণ করেন। এই আয়োজনে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্ট, বিটিআরসির কর্মকর্তাসহ প্রায় তিন শতাধিক প্রযুক্তি প্রেমী অংশগ্রহণ করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, সাইবার সিকিউরিটির উপড় আমরা যতই পলিসি করি না কেন, সেগুলো বাস্তবায়ন হবে না যদি না জনগনের মধ্যে এবিষয়ে সচেতনতা তৈরি না হয়। কেউ কারো সাইবার নিরাপত্তা দিতে পারবে না। প্রত্যেক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে তার নিজ নিজ সাইবার প্রটেকশন নিশ্চিত করতে হবে। এ বিষয়ে প্রত্যেকেই সচেতন হওয়া জরুরী। নতুন প্রজন্মকে দায়িত্ব নিতে হবে আগামীর সুন্দর বাংলাদেশের, তাই তাদেরকে সাইবার নিরাপত্তার ব্যপারে সচেতন ও দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে প্রফেসর ড. এম লুৎফর রহমান বলেন, বর্তমানে বিশ্বের সাড়ে ৪ বিলিয়ন মানুষ সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে। বর্তমান সময়টাই তথ্য প্রযুক্তি ও ইন্টারনেটের। ইন্টারনেট ছাড়া এখন একটি দিনও কল্পনা করা যায় না। সুতরাং আমাদেরকে সাইবার দুনিয়া সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। বাংলাদেশে এখন তথ্য প্রযুক্তির বিপ্লব ঘটছে। এখনই সময় সাইবার নিরাপাত্তা সম্পর্কে সচেতন হওয়ার। আজকের সেমিনার ও কর্মশালা থেকে তরুণ প্রজন্ম সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
তিনি আরো বলেন, বর্তমান যুগকে বলা হচ্ছে ডাটার যুগ। যার হাতে যত ডাটা তিনি তত ক্ষমতাবান। সুতরাং ইন্টারনেটের দুনিয়ায় আমাদের ডাটাকে সুরক্ষিত রাখা ছাড়া উপায় নেই। সারা পৃথিবীতেই হ্যাকিংয়ে ঘটনা বাড়ছে। শুধু গত বছরেই পৃথিবীর ৮৩ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট কোন না কোনাভাবে হ্যাকিংয়ের শিকার হয়েছে। সুতরাং সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কে সচেতন হওয়া ছাড়া উপায় নেই। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, পৃথিবীর মাত্র ৭ শতাংশ মানুষ সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কে সচেতন।
সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইঞ্জি. মোঃ মহিউদ্দিন আহমেদ, ভাইস-চেয়ারম্যান, বিটিআরসি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামসুল আরেফিন, ডিন, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ, চুয়েট, লেফটেন্যান্ট কর্নেল এস এম রেজাউর রহমান, পরিচালক (সিস্টেম ও সেবা বিভাগ), এ.এস.এম. খায়রুজ্জামান ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিওও, ডঃ ইমরান মাহমুদ, বিভাগীয় প্রধান, সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ডিআইউ। সমাপনী অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইঞ্জি. মোঃ মুশফিকুর রহমান, উপদেষ্টা, সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন।