সিনিউজ ডেস্ক: প্রথম চারটি আয়োজনে ব্যাপক সাড়া পাওয়ার পর ডিপিএস এসটিএস স্কুল ঢাকা এবারে সফলভাবে সম্পন্ন করেছে তাদের পঞ্চম ডিপিএস মডেল ইউনাইটেড নেশনস কনফারেন্স (ডিপিএসএমইউএন)’এর আয়োজন। ৪ থেকে ৬ মার্চ, ২০২২ তারিখে ডিপিএস এসটিএস স্কুল ঢাকার সিনিয়র সেকশন ক্যাম্পাসে “ডিপিএসএমইউএন ফাইভ” আয়োজিত হয়, যার অন্যতম উদ্দেশ্য কিশোর ও তরুণদের মাঝে পাবলিক স্পিকিং অর্থাৎ সর্বসাধারণের মাঝে নিঃসংকোচে কথা বলার সক্ষমতা তৈরিতে সহায়তা করা এবং নানান সামাজিক ও বৈশ্বিক সংকটের সমাধান অন্বেষণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস গঠন করা। গ্রেড ৮ থেকে ১২’তে অধ্যয়নরত ৩০০’রও বেশি শিক্ষার্থী “ডিপিএসএমইউএন ফাইভ” এ অংশগ্রহণের জন্য নিবন্ধন করে।
শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের পরিপ্রেক্ষিতে আয়োজিত মডেল ইউনাইটেড নেশনস কনফারেন্সসমূহ মূলত জাতিসংঘের (ইউএন) সম্মেলনের আদলে পরিচালিত হয়, যেখানে শিক্ষার্থীরা কূটনীতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক সংক্রান্ত ধারণা লাভ করে এবং জাতিসংঘের অনুকরণে সম্মিলিত উপায়ে সমস্যার সমাধান অনুসন্ধান করা শিখতে পারে। ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্কুলের ছাত্রদেরকে ডিপিএসএমইউএনে বিভিন্ন দেশের “ডেলিগেট” বা প্রতিনিধি হিসাবে নির্বাচিত করা হয়, এবং তারা অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব থেকে শুরু করে বর্তমান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সংক্রান্ত নানা বিষয়ে বিতর্কে অংশ নেয়।
অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন বাংলাদেশে ইউএনডিপির প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জি এবং এসটিএস গ্রুপের সিইও ড. সন্দীপ অনন্তনারায়ণ। অনুষদ সদস্য, আমন্ত্রিত অতিথি এবং অংশগ্রহণকারীদের সাথে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অধ্যক্ষ ড. শিবানন্দ সিএস এবং সহ অধ্যক্ষ বিজো কুরিয়ান। ডিপিএস এসটিএস স্কুল ঢাকা’র অধ্যক্ষ ড. শিবানন্দ সিএস ডিপিএসএমইউএন ফাইভের চূড়ান্ত অনুষ্ঠানে তার স্বাগত বক্তব্যে ফাইনালিস্টদের সহ সকল অংশগ্রহণকারীদের অভিনন্দন জানান। “আমরা শিক্ষার্থীদের মাঝে আত্মনির্ভরশীল ব্যক্তিত্ব তৈরির দিকে গুরুত্ব দিয়ে থাকি, যাতে তারা বাস্তব জীবনের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত থাকে,” তিনি বলেন। “এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে তারা সাম্প্রতিক বিষয়গুলো সম্পর্কে আরও বেশি সচেতন হয়ে ওঠে, নেতৃত্বের গুণাবলী অর্জন করে এবং জনসাধারণের মাঝে কথা বলার দক্ষতা অর্জন করে।”
“অনেকবার এমন হয়েছে যে, যৌক্তিক এবং সঠিক ধারণা থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র আত্মবিশ্বাস এবং অন্যকে প্রভাবিত করার দক্ষতার অভাবের কারণে আমি নিজের মতামতকে প্রকাশ করার সঠিক উপায় খুঁজে পাইনি এবং শেষ পর্যন্ত আমার দাবি প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হয়েছি। ডিপিএসএমইউএন ফাইভে আমি প্রথমবারের মত অনেকের সামনে কোনো বক্তব্যকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য কথা বলার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। আমি মনে করি, এটি অবশ্যই আমার একাধিক ধারণার মধ্যকার দ্বন্দ্বকে স্পষ্টভাবে বোঝার এবং বিতর্ক ও আলোচনার মাধ্যমে একাধিক বিকল্পের মধ্য থেকে শ্রেষ্ঠ সমাধানটি বেছে নেওয়ার দক্ষতাকে আগের চাইতে উন্নত করেছে,” – বলেন ডিপিএসএমইউএন ফাইভের একজন প্রতিযোগী।
সারা বাংলাদেশ থেকে যুক্ত হওয়া ডিপিএসএমইউএন ফাইভের স্বনামধন্য স্পনসরদের মধ্যে ছিল – এক্সিলেন্স, প্রাণ, স্মার্ট কারস অ্যাসোসিয়েশন, সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড, খান ট্রেডিং কর্পোরেশন, এবিসি টাইলস এবং বিলজ ম্যাগাজিন। আয়োজনে ফুড পার্টনার হিসেবে যুক্ত ছিল – বিনস এন্ড অ্যারোমা, ঠান্ডা গরম, বিএফসি, অরেঞ্জ এন্ড হাফ, স্ট্রিট চিকেন এবং প্রিমিয়াম সুইটস। ক্লোদিং পার্টনার হিসেবে ছিল ভ্যালোরে।
দেশের স্কুলগুলোতে মডেল ইউনাইটেড নেশনস সম্মেলনের চেতনাকে পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্যকে সামনে রেখে কাজ করছে ডিপিএসএমইউএন, যেহেতু কোভিড-১৯ মহামারী গত কয়েক বছর ধরে ভবিষ্যতের সম্ভাবনাময় ডেলিগেটদের জন্য এমইউএনের আনন্দটি আবিষ্কার করার পথে বাধা তৈরি করে এসেছে। এমইউএন সম্মেলনগুলি শিক্ষার্থীদের মাঝে সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক চর্চার মাধ্যমে নিজ নিজ ভবিষ্যতের সম্ভাবনাগুলো খুঁজে নেওয়ার পথে একটি শক্তিশালী পোর্টফোলিও তৈরিতে সহায়তা করে। সেই সাথে, একবার একজন ছাত্র এমইউএন ক্লাবের অংশ হলে তারা তাদের স্কুলের বাকি বছরগুলির জন্যও এটির অংশ হিসেবে যুক্ত থাকে, যা দীর্ঘমেয়াদে তাদের পাঠ্যক্রম সহায়ক কার্যক্রমের অগ্রগতিকেও সুরক্ষিত রাখে। ডিপিএসএমইউএন ক্লাব সর্বদা বাংলাদেশের স্কুল এমইউএন-এর বিকাশে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে এবং ক্রমশ এর মানোন্নয়নে ভূমিকা রেখেছে।