সিনিউজ ডেস্ক: দেশের আর্থিক অন্তর্ভুক্তির চিত্র বদলে দেয়া মোবাইল আর্থিক সেবা খাতের ১০ বছর পূর্তি উদযাপনে বন্দর নগরী চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হলো এমএফএস মেলা। এমএফএস নিয়ে সচেতনতামূলক পুতুল নাচ, গম্ভীরা, পথ নাটক নিয়ে সিআরবি প্রাঙ্গনে আয়োজিত এই বর্নাঢ্য মেলার উদ্বোধন করা হয় বেলুন উড়িয়ে। ১১ কোটির বেশি গ্রাহকের এমএফএস খাতের ১০ বছর পূর্তি উদযাপিত হচ্ছে ‘হাতের মুঠোয় আর্থিক সেবা’ স্লোগানে। স্লোগানের সাথে মিল রেখে ‘থিম সং’ও উদ্বোধন করা হয় মেলায়।
এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর অংশগ্রহণে এই মেলার উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ ব্যাংক, চট্টগ্রাম অফিস এর মহা-ব্যবস্থাপক আরিফ হোসেন খান। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের উপ মহা-ব্যবস্থাপক মুহাম্মদ বদিউজ্জামান দিদার, বাংলাদেশ ব্যাংক, চট্টগ্রাম অফিস এর উপ-মহাব্যবস্থাপক অসিম কুমার চৌধুরী ও সরুপ কুমার চৌধুরী এবং ১০ বছর পূর্তি আয়োজক কমিটির আহবায়ক ও বিকাশের চিফ এক্সটার্নাল অ্যান্ড কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার মেজর জেনারেল শেখ মো: মনিরুল ইসলাম (অব:) সহ অন্যান্য এমএফএস এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
১০ বছর পূর্তি আয়োজনের পৃষ্ঠপোষকতায় রয়েছে বিকাশ, রকেট, এমক্যাশ, উপায়, ট্যাপ, মাই ক্যাশ, টেলিক্যাশ, ট্যাপ এন পে, এফএসআইবিএল, রূপালী ব্যাংক লিমিটেড, ওকে ওয়ালেট, ইসলামিক ওয়ালেট ও নগদ।
এমএফএস খাতের ১০ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষ্যে বিভাগীয় শহরগুলোতে এমএফএস মেলা ও ঢাকায় সেমিনারসহ নানান উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
এক দশক আগে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ও ঐকান্তিক ইচ্ছায় প্রশস্ত হয় বাংলাদেশের মোবাইল আর্থিক সেবার পথ চলা। সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্পের অংশ হিসেবে ব্যাংকিং সেবার বাইরে বা সীমিত ব্যাংকিং সেবার আওতায় থাকা জনগনকে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির আওতায় আনতে ২০১১ সালে শুরু হয় মোবাইল ভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিবিড় তত্ত্বাবধান ও পর্যবেক্ষণে সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর উদ্যোগে মাত্র
দশ বছরেই এমএফএস এখন দেশের মানুষের প্রতিদিনের আর্থিক লেনদেনের অংশ। শুধুমাত্র দেশে নয়, সারা বিশ্বে আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে বাংলাদেশের এমএফএস খাত।
ব্যাংক-লেড মডেলে যাত্রা শুরু করা এ খাতে বর্তমানে ১৩টি এমএফএস প্রতিষ্ঠান সেবা দিচ্ছে। সবগুলো এমএফএস মিলিয়ে গ্রাহক সংখ্যা ১১ কোটির বেশি। এজেন্ট সংখ্যা ১১ লাখের বেশি। গড়ে দৈনিক এক কোটির বারের ওপরে লেনদেন হয় এমএফএসে, টাকার অংকে যার পরিমাণ ২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা।
প্রযুক্তি ব্যবহার করে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে টাকা পাঠানোর জন্য ক্যাশ ইন, ক্যাশ আউটের সুযোগ নিয়ে যাত্রা শুরু হলেও সময়ের সাথে সাথে বিভিন্ন ধরনের সৃজনশীল সেবা যুক্ত করেছে এমএফএস। মোবাইল রিচার্জ করা, বিদেশ থেকে সরাসরি রেমিটেন্স পাওয়া, মোবাইল অ্যাকাউন্টে সঞ্চিত অর্থের উপর মুনাফা, বিভিন্ন ধরনের ইউটিলিটি সেবার বিল পেমেন্ট, ব্যাংক থেকে এমএফএস অ্যাকাউন্টে টাকা আনা, এমএফএস অ্যাকাউন্ট থেকে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো, সরকারের বিভিন্ন ধরনের ভাতা ও উপবৃত্তি বিতরণ, তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকসহ বিভিন্ন শিল্পের শ্রমিকদের বেতন বিতরণ, এমএফএস অ্যাকাউন্টে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ডিজিটাল ন্যানো ঋণ এবং মাসিক সঞ্চয় সেবাসহ প্রতিনিয়তই নতুন সেবায় সমৃদ্ধ হচ্ছে এমএফএস খাত। ফলে সক্ষমতা ও স্বাধীনতা এসেছে মানুষের দৈনন্দিন আর্থিক লেনদেনে।