ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর সার্বিক দিকনির্দেশনায় ভূমি মন্ত্রণালয় ডিজিটাল সেবা প্রবর্তন এবং আইন ও বিধি-বিধান সংশোধন করে টেকসই ভূমি ব্যবস্থাপনা স্থাপনে জোর দিচ্ছে। এই টেকসই ভূমি ব্যবস্থায় সঠিক দলিলাদি ছাড়া কেউ কোনো জমি দখল করে রাখতে পারবে না। এর ফলে অবৈধ দখলদারদের ভূমি দস্যুতার সুযোগ পাবে না।
আজ ‘বার্তা, দাপ্তরিক স্মৃতিকোষ এবং অনলাইনে জলমহালের আবেদন প্রক্রিয়া’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এই কথা বলেন। এসময় সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভূমি সচিব মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার মাহবুবুল হক।
মন্ত্রী বলেন, পর্যায়ক্রমে সরকারের সব সায়রাত মহালের সম্পদ ব্যবস্থাপনা ডিজিটালাইজেশনের আওতায় চলে আসবে। ইতোমধ্যে ৭৬ শতাংশ সরকারি ভূ-সম্পদ, খাস জমি ও সায়রাত মহালের তপশিল ভূমি তথ্য ব্যাংকে আপলোড করা হয়েছে। ভূমি তথ্য ব্যাংক চালু হয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট প্রকৃত পেশাজীবী ও ব্যবসায়ীদের কাছে স্বচ্ছতা ও দক্ষতার সাথে সরকারি সম্পদ ইজারা দেওয়া সম্ভব হবে। এতে সরকারের রাজস্ব আয় বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে বলে জানান তিনি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ‘বার্তা’ অ্যাপের মাধ্যমে শুভেচ্ছা পাঠান। এছাড়া, একটি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি অনুষ্ঠানস্থলে অনলাইনে জলমহাল আবেদন করেন। অনুষ্ঠানে ‘দাপ্তরিক স্মৃতি কোষ’এর ওপর একটি সচিত্র উপস্থাপনা করেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের ভূমিসেবা ডিজিটাইজেশন মনিটরিং সেলের প্রধান ড. মোঃ জাহিদ হোসেন পনির।
অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ভূমিমন্ত্রী বলেন, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের সম্পত্তির উত্তরাধিকারের ব্যাপারটি আইনের আওতায় নিয়ে আসলে তাঁরা আইনি কাঠামোর মধ্যে তাদের সমস্যার প্রতিকার পেতে পারবেন।
ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান সোলেমান খানসহ ভূমি মন্ত্রণালয় ও এর আওতাভুক্ত দপ্তর-সংস্থা, কর্মকর্তাবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনলাইনে জলমহাল ইজারার আবেদন: সরকারি জলমহাল ব্যবস্থাপনা নীতি, ২০০৯ অনুযায়ী নিবন্ধিত ও প্রকৃত মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি কর্তৃক অনলাইনে ইজারার আবেদন দাখিলের ব্যবস্থা প্রবর্তনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক land.gov.bd ভূমিসেবা কাঠামো থেকে অথবা সরাসরি jm.lams.gov.bd ওয়েব পোর্টালে গিয়ে জলমহাল ইজারার জন্য আবেদন দাখিল করা যাবে। এছাড়া, জলমহাল ইজারার আবেদন অনলাইনে দাখিল এবং ইজারা প্রক্রিয়ার বিস্তারিত উপর্যুক্ত ওয়েবপোর্টাল থেকেই জানা যাবে।
উল্লেখ্য, ‘উন্নয়ন প্রকল্পে’ ৬ বছরের জন্য ২০ একরের ঊর্ধ্বে সরকারি জলমহাল এবং বিশেষ ধরনের বিবিধ জলমহাল ইজারা আবেদন মন্ত্রণালয় পর্যায়ে ভূমিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ‘সরকারি জলমহাল ইজারা সংক্রান্ত কমিটি’র সভায় উপস্থাপন ও অনুমোদন হয়। ‘সাধারণ আবেদনে’ ৩ বছরের জন্য ২০ একরের ঊর্ধ্বে বদ্ধ সরকারি জলমহালের ইজারা আবেদন ‘জেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটি’র সভায় উপস্থাপন ও অনুমোদন হয়। ‘সাধারণ আবেদনে’ ৩ বছরের জন্য ২০ একর পর্যন্ত বদ্ধ জলমহালের ইজারা আবেদন ‘উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটি’র সভায় উপস্থাপন ও অনুমোদন হয়।
দাপ্তরিক স্মৃতি কোষ: দাপ্তরিক স্মৃতি কোষ হচ্ছে ভূমি সংশ্লিষ্ট সকলের অভিজ্ঞতার ডিজিটাল আর্কাইভ কোনো অনুষ্ঠান বাস্তবায়নের অভিজ্ঞতা সংরক্ষণ, কেউ অবসরে গেলে বা বদলি হলে তার অভিজ্ঞতার স্থায়ী সংরক্ষণ এবং প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান থেকে সংশ্লিষ্ট সকলের লাভবান হবার সুযোগ থাকবে এতে।
বার্তা অ্যাপ: ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তথ্য আদান প্রদানের অ্যাপ হচ্ছে ‘বার্তা’। তাৎক্ষনিক ভয়েস বা টেক্সট আদান প্রদানের সুযোগ, ভূমি মন্ত্রণালয়ের দপ্তর সংস্থার মধ্যে আন্তঃযোগাযোগ, এবং তাৎক্ষণিক কেন্দ্রীয় বা বিভাগভিত্তিক বা জেলাভিত্তিক প্রতিবেদন তৈরির সুযোগ রয়েছে এ অ্যাপসে।