সিনিউজ ডেস্ক: রাজধানীর রেডিসন ব্লু ঢাকা ওয়াটার গার্ডেন হোটেলে জমকালো গালা আয়োজনের মাধ্যমে গত শনিবার, ২৬ আগস্ট অনুষ্ঠিত হয়েছে ২য় বাংলাদেশ ফিনটেক এওয়ার্ড আয়োজনটির। মাস্টারকার্ডের সৌজন্যে, বিকাশ লিমিটেডের সঞ্চালনায় এবং মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, উপায়, বেসিস এবং দ্য ডেইলি স্টারের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত এই সম্মাননা অনুষ্ঠানের উদ্যোগে ছিলো বাংলাদেশ ফিনটেক ফোরাম এবং আয়োজনে বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম। এইদিন ফিনটেক ক্ষেত্রে অবধারিত ১১টি ভিন্ন ভিন্ন ক্যাটেগরিতে ২৮টি ফিনটেক উদ্ভাবনকে সম্মানিত করা হয়। যার মধ্যে ১৪টি উদ্ভাবন অর্জন করে মর্যাদাপূর্ণ ফিনটেক এওয়ার্ড এবং ১৪টি উদ্ভাবনকে অনারেবল মেনশন সম্মাননা প্রদান করা হয়।
দেশের ফিনটেক শিল্পের উদ্ভাবনীকে ত্বরান্বিত করতে এবং বৈশ্বিক উন্নয়নের সাথে অগ্রসর হওয়ার জন্যে এই শিল্পে জড়িত প্রতিষ্ঠান গুলোকে অনুপ্রাণিত করার লক্ষ্যে সম্মাননাটির ২য় আসরটি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
২য় বাংলাদেশ ফিনটেক এওয়ার্ডে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনাইদ আহ্মেদ পলক,এমপি।
২য় বাংলাদেশ ফিনটেক এওয়ার্ডের প্রধান অতিথি জনাব জুনাইদ আহ্মেদ পলক,এমপি, তার বক্তৃতায় বলেন, “বিগত কয়েক বছরে ফিনটেকের কল্যাণে বাংলাদেশ অর্থনীতির বিস্তারে বেশ কিছু ভালো দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মানের পথে ফিনটেকের ভূমিকা অপরিহার্য। ফিনটেকের সুবিধাসমূহ শহরাঞ্চল ছাড়িয়ে সর্বাপরি বিস্তার করার জন্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আজকের এই আয়োজনটি আমাদের অর্থায়ন সহ সম্পূরক খাতের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের ফিনটেকের সহায়তায় একটি স্মার্ট অর্থনীতি গড়ে তুলতে উৎসাহিত করবে বলে আমার বিশ্বাস।”
আয়োজনটি দেশের ব্যাংকিং এবং ফাইন্যান্স খাতের প্রতিনিধি এবং কর্মজীবীদের অভূতপূর্ব সাড়া লাভ করে। প্রায় ৫০০ জন ফিনটেক খাতে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খাতের প্রতিনিধি ও বিশেষজ্ঞদের উপস্থিতিতে মর্যাদাপূর্ণ এই সম্মাননাটি বিজয়ীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
১১টি ক্যাটেগরিতে সম্মাননাটি প্রদানের জন্য এ বছরের ৪ জুলাই হতে ৩ আগস্ট পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন গ্রহণ করা হয়। উক্ত সময়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান হতে ১২৩টি নমিনেশন পুরষ্কারের জন্য জমা পড়ে। নমিনেশন গুলো হতে সেরা ফিনটেক উদ্ভাবন গুলোকে বাছাই করার লক্ষ্যে গত ২১ হতে ২৩ আগস্ট ৫টি গ্র্যান্ড জুরি সেশনের আয়োজন করা হয়। দেশের ব্যাংকিং এবং ফাইন্যান্স খাতের ২০ জন সম্মানিত ক্যাটেগরি বিশেষজ্ঞদের বহুমুখি পর্যালোচনা এবং বাছাই প্রকৃয়ার মাধ্যমে চূড়ান্ত বিজয়ীদের বাছাই করা হয়।
জুরি সেশন গুলোতে বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেনঃ আনিস এ খান, চেয়ারম্যান, এএজেড অ্যান্ড পার্টনারস; গাজী ইয়ার মোহাম্মদ, কো ফাউন্ডার এন্ড সিইও, ডানা ফিনটেক; গীতাঙ্কা ডি. দত্ত, ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং চিফ বিজনেস অফিসার (এসএমই অ্যান্ড রিটেইল), আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসি; রাহেল আহমেদ, ফাউন্ডার, ওগ্রিম; ফিরোজ আহমেদ খান, ডিরেক্টর অব ফাইন্যান্স, টেলিনর হেলথ; হুসাইন এ সামাদ, সিনিয়র রিসার্চার এন্ড পলিসি এনালিস্ট, আইডিইএ ফাউন্ডেশন; কনসালটেন্ট,ওয়ার্ল্ড ব্যাংক; রেজাউল হোসেন, ম্যানেজিং ডিরেক্টর এন্ড সিইও, সেলেরো লিমিটেড; সাব্বির আহমেদ, হেড অব কনজিউমার, প্রাইভেট অ্যান্ড বিজনেস ব্যাংকিং, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ; নুরুন নাহার বেগম, চিফ টেকনোলজি অফিসার, ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড; সৈয়দ মঈনুদ্দিন আহমেদ, এডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর এন্ড কম্পানী সেক্রেটারি, গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড; কে এ এম মাজেদুর রহমান, গ্রুপ সিইও, এ.কে. খান অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেড; ফাহিম আহমেদ, চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার, পাঠাও লি.; নূর এলাহী, ম্যানেজিং ডিরেক্টর, ওয়েগেলি; সৈয়দ আদনান হুদা, সিএফএ চিফ অপারেটিং অফিসার, ইউসিবি স্টক ব্রোকারেজ লিমিটেড।
বাংলাদেশ ফিনটেক ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা এবং বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক, শরিফুল ইসলাম আয়োজনটির উদ্বোধনী বক্তৃতায় বলেন, “বাংলাদেশে ফিনটেক খাতে সম্ভাবনা অপরিসীম। এখানে সমবেত আমরা সবাই দেশের ফিনটেক শিল্পকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার এবং দেশের মানুষকে সেবা প্রদানের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এই সম্মাননাটি দেশের ফিনটেক খাতে প্রতিনিয়ত উদ্ভাবিত নতুন নতুন প্রযুক্তি এবং প্রচেষ্ঠা গুলোকে অনুপ্রাণিত করার লক্ষ্যেই আয়োজিত।
এওয়ার্ড আয়োজনটির পূর্বে বাংলাদেশ ফিনটেক ফোরামের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় ৪র্থ বাংলাদেশ ফিনটেক সামিট। মাস্টারর্কার্ডের সৌজন্যে, বিকাশ লিমিটেডের সঞ্চালনায় এবং মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, উপায়, বেসিস এবং দ্য ডেইলি স্টারের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত সামিটটির আয়োজনে ছিলো বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম।
দিনব্যাপী ফিনটেক সামিটে বাংলাদেশ এবং বহির্বিশ্বের ব্যাংকিং এবং অর্থায়ন খাতের উল্লেখযোগ্য বিশেষজ্ঞ, কর্মজীবী এবং সিদ্ধান্ত প্রণেতারা অংশগ্রহণ করেন। “শেপিং বাংলাদেশ ফিনটেক ইকোসিস্টেম ফর দ্য ফিউচার” বা ভবিষ্যতের জন্য বাংলাদেশের ফিনটেক খাতকে প্রস্তুত করার প্রতিপাদ্য নিয়ে বিশেষজ্ঞরা দিনব্যাপী বিভিন্ন সেশনে অংশগ্রহণ করেন। আয়োজনটির অন্যতম উদ্দেশ্য ছিলো ফিনটেক উদ্ভাবনীর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পরিবর্তনশীল সম্ভাবনাকে তুলে ধরা হয় এবং ফিনটেক উদ্ভাবনকে অধিক প্রশস্ত করার একটা দিকনির্দেশনা প্রনয়ন করা।
৪টি কিনোট সেশন, ৩টি প্যানেল ডিসকাশন, ৪টি ইনসাইট সেশন, ১টি কেস স্টাডি, ১ টি ফায়ারসাইড চ্যাট এবং ১টি কনভারসেশনের সমন্বয়ে এই বছরের ফিনটেক সামিটটি অনুষ্ঠিত হয়।
৪র্থ ফিনটেক সামিটের বিভিন্ন আলোচনায় প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠে ডিজিটাল যুগে ব্যাংকিং খাতের উপর্যুপরি পরিবর্তনের দিকনির্দেশনা, বাংলাদেশের ফিনটেক উদ্ভাবনীর বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় ধাপ, সম্ভাবনা এবং বৈশ্বিকভাবে প্রচলিত রীতির গুলোর বাস্তবায়নের বিভিন্ন দিক, ফিনটেকের বিকাশে ব্লকচেইনের গুরুত্বসহ স্মার্ট বাংলাদেশ ভিশনের ফিনটেক খাতকে সমৃদ্ধ করার নানামুখী উদ্যোগসমূহ।
সামিটিটিতে কিনোট বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন: আরফান আলী, চেয়ারপারসন, জায়টুন বিজনেস কনসালটেন্টস; চেয়ারম্যান, ওঙ্কুর ডিজিটাল লিমিটেড; বেঞ্জামিন কুইনলান, ম্যানেজিং ডিরেক্টর, কুইনল্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস; ফরমার প্রেসিডেন্ট, হংকং ফিনটেক অ্যাসোসিয়েশন; মামুন রশিদ, কান্ট্রি ক্লায়েন্টস অ্যান্ড মার্কেটস লিড, পিডব্লিউসি বাংলাদেশ; এবং হৃষিকেশ মেহতা, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট – ফিন্যানশিয়াল সার্ভিসেস, ওপেন নেটওয়ার্ক ফর ডিজিটাল কমার্স।
মাস্টারকার্ডের সৌজন্যে, বিকাশ লিমিটেডের সঞ্চালনায় এবং মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, উপায়, বেসিস এবং দ্য ডেইলি স্টারের সহযোগিতায় আয়োজিত ৪র্থ বাংলাদেশ ফিনটেক সামিট এবং ২য় বাংলাদেশ ফিনটেক এওয়ার্ড আয়োজন দুটি হলো বাংলাদেশ ফিনটেক সামিটের একটি উদ্যোগ। উদ্যোগ দুটি আয়োজন করে বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম। স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার-এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই), ইনোভেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েটস ফাউন্ডেশন, স্মার্ট বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক; ইনোভেশন পার্টনার – বাংলাদেশ ইনোভেশন কনক্লেভ; হসপিটালিটি পার্টনার – রেডিসন ব্লু ঢাকা ওয়াটার গার্ডেন; টেকনোলজি পার্টনার – আমরা টেকনোলজিস লিমিটেড এবং পিআর পার্টনার – ব্যাকপেজ পিআর।