সিনিউজ ডেস্ক: টেকনোলজি মিডিয়া গিল্ড বাংলাদেশ (টিএমজিবি) এর সদস্যদের জন্য প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) এর সহযোগিতায় সাংবাদিকতায় ফ্যাক্টচেক বিষয়ক ৩ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মসূচির সমাপনী অনুষ্ঠান রবিবার ৩০ অক্টোবর ২০২২ সকালে অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক, এমপি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ এর সু-পরামর্শে এবং তাঁর নেতৃত্বে আমরা বর্তমান ডিজিটাল বাংলাদেশ উপহার পেয়েছি। এর ফলে আইসিটি সেক্টরে প্রায় ২০ লক্ষ তরুন তরুনীর কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে এবং বাংলাদেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৩ কোটিতে বৃদ্ধি পেয়েছে পাশাপাশি দুই হাজারেরও বেশি ডিজিটাল সরকারি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। অপরদিকে আমরা একটি প্রযুক্তি শিল্পের নতুন দ্বার উন্মোচন করতে পেরেছি যার ফলে কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি প্রায় ১.৫ বিলিয়ন ডলার প্রযুক্তি শিল্প থেকে রপ্তানি আয় করতে পারছি।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পলক “ফেইক নিউজ” শব্দের পরিবর্তে “মিস ইনফরমেশন” বা “গুজব” অথবা “মিথ্যা অপপ্রচার” বলতে উৎসাহিত করে বলেন আমরা যখনই “ফেইক নিউজ” শব্দটি ব্যবহার করি তখনই একে সংবাদের একটি অংশ হিসেবে বোঝায়। কিন্তু এতে আমাদের সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে যারা দর্শক বা পাঠক রয়েছেন তাদের মধ্যে একধরনের ভুল বোঝা-বুঝির তৈরি হয়। “ফেইক নিউজ” অথবা “মিথ্যা অপপ্রচার” বা গুজব কখনই সংবাদ হতে পারে না বলে প্রতিমন্ত্রী মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন যে ভুল তথ্য সমাজে অস্থিরতা বয়ে আনে। আর সংবাদমাধ্যমের ভুল তথ্য সেটি বাড়িয়ে দিয়ে নানান অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটিয়ে ফেলে। তাই সাংবাদিকতায় ফ্যাক্ট চেক এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিমন্ত্রী পলক ডিজিটাল বাংলাদেশ-এর প্রযুক্তিগত সুফল সম্পর্কে আলোচনা করেন। সবশেষে তিনি প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) এর ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্ম এর শুভ উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে সভা প্রধান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিআইবি মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ। তিনি বলেন যে সামাজিক মাধ্যম থেকে আরম্ভ করে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে তথ্য-প্রযুক্তির বিকাশের ফলে গুঁজব খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে । তিনি বলেন, এই গুজব প্রতিরোধ করার দায়িত্ব কিন্তু সাংবাদিক হিসেবে কিছুটা আমাদের উপরেও আসে। সেই জন্য ২০১৮ সালে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় থেকে একটি গুজব প্রতিরোধ এবং অবহিতকরণ সেল গঠন করা হয়। সেই সেল থেকে আমরা অনেক দিকনির্দেশনা দিয়েছিলাম এবং একইসাথে বিভিন্ন সময়ে করোনাকালীন গুজবগুলো প্রতিরোধের জন্য অনেক চেষ্টা করা হয়েছে। এই সেল এখনও বিদ্যমান রয়েছে। তিনি বলেন গুজব প্রতিরোধ করা সহজ নয়। তথ্যপ্রযুক্তির যে বিকাশ ঘটছে তাতে গুজবেরও পাশাপাশি বিকাশ হচ্ছে। তথ্য প্রযুক্তির বিকাশের কারণে সাংবাদিকতায় গুনগত পরিবর্তন এসেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন টিএমজিবি সভাপতি মোহাম্মদ কাওছার উদ্দীন, সাধারণ সম্পাদক মুরসালিন হক জুনায়েদ এবং প্রশিক্ষনে অংশগ্রহনকারী টিএমজিবি সদস্যবৃন্দ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পিআইবি এর সহকারী প্রশিক্ষক নাসিমূল আহসান। পিআইবির আয়োজনে গত ২৮ অক্টোবর থেকে তিন দিনের কর্মশালাটিতে ৩০ জন তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক সাংবাদিক “সাংবাদিকতায় ফ্যাক্টচেক” বিষয়ক প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন। কর্মশালার তিন দিনে ফ্যাক্টচেক নিয়ে বিভিন্ন বক্তব্য উপস্থাপন, পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন, অভিমত গ্রহণ, মক সেশন পরিচালনা ও মুক্ত আলোচনা হয়। পিআইবির সহকারী প্রশিক্ষক নাসিমূল আহসানের সমন্বয়ে এতে প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন এএফপি ফ্যাক্টচেকের বাংলাদেশ সম্পাদক কদরুদ্দীন শিশির, RAB এর সাবেক সোশ্যাল মিডিয়া কনসালটেন্ট ইমরান সাগর এবং আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক প্রশিক্ষক সাহস মোস্তাফিজ।