সিনিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশ-জাপান বাণিজ্য উন্নয়ন, ব্যবসা সম্প্রসারণ ও আধুনিক বাংলাদেশের সক্ষমতা তুলে ধরতে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) কর্তৃক আয়োজিত হল বেসিস জাপান ডে ২০২২। রবিবার ২০ নভেম্বর রাতে রাজধানীর গুলশানের লেকশোর হোটেলে উক্ত অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে বেসিস।
উক্ত অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং জাইকা বাংলাদেশ অফিসের চীফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইচিগুচি তোমহাইদ। উক্ত অনুষ্ঠানে বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ এর সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বেসিস জাপান ডেস্ক এর চেয়ারম্যান ও বেসিস পরিচালক একেএম আহমেদুল ইসলাম বাবু।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি বলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের অত্যন্ত মূল্যবান ২টি সম্পদ যথা মাটি এবং মানুষ-কে গুরুত্ব দিতে বলেছেন। বিশ্বের অন্যতম উন্নত দেশ জাপানেও আমরা দেখেছি যে তারাও মাটি এবং মানুষকে প্রাধান্য দিয়ে তাদের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে সক্ষম হয়েছে। পলক বলেন যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা ও প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে কিছু বিশেষ কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে আমাদের দেশকে গত ১৩ বছরে উন্নতির শিখরে নিয়ে গেছেন।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন যে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে আইসিটি বিষয়কে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। একইসাথে তাদের জন্য কম্পিউটার ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে যেনো ছোটবেলা থেকেই তারা কোডিং ও প্রোগ্রামিং বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে পারে। তিনি বলেন ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরির লক্ষ্যে স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট সরকার এবং স্মার্ট সোসাইটি এই ৪টি বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। জনগণের জীবনকে আরো সহজ করতে এআই, রোবোটিক, বিগ ডেটা অ্যানালিটিক ইত্যাদির ব্যবহারও শুরু করা হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন যে জাপানের সাথে বাংলাদেশের যৌথভাবে কাজ করার এখুনি উপযুক্ত সময়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সব সময় পরামর্শ দেন যে সরকারকে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে হবে এবং বেসরকারি খাতকে ব্যবসা করতে হবে। এটাই বর্তমান সরকারের অন্যতম কৌশল যা আমরা অনুসরণ করি। অর্থাৎ সরকার ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ আনবে ও বেসরকারি খাত ব্যবসা করবে যা বর্তমান সরকারের কৌশলনীতি।
সবশেষে, প্রতিমন্ত্রী পলক জাপানের ভাষা শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং ব্যবসায় শিষ্টাচার এই ৩টি এরিয়াতে দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।
বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ বলেন যে, বাংলাদেশ ও জাপান এর মধ্যে অত্যন্ত সুন্দর ও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান। বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে জাপানের সহযোগিতা বরাবরই ইতিবাচক। অর্থনৈতিক এবং কূটনৈতিক সম্পর্কের দিক থেকে জাপান বাংলাদেশের জন্য বন্ধুরাষ্ট্র।
উক্ত অনুষ্ঠানে ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন: স্কোপ ফর জাপান-বাংলাদেশ কোলাবরেশন এর উপর একটি প্রেজেন্টেশন দেন জেটরো বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ইউজি আনদো। সবশেষে, বেসিস এবং মিয়াজাকি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে জাপান ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে আসছে। বাংলাদেশ জাপানের বিনিয়োগের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তির দিক থেকে অনেক এগিয়েছে। তাই বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাত একটি উল্লেখযোগ্য সম্ভাবনাময় খাত। বাংলাদেশ সরকার দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে খুবই গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। তাই তথ্য-প্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশ ও জাপানের একসাথে কাজ করার বেশ সুযোগ রয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি ছাড়াও অন্যান্য বাণিজ্য প্রসারে জাপানের বাজার এ দেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ট্রেড ইনভেস্টমেন্ট এবং নেটওয়ার্কিংয়ের ক্ষেত্রে সর্ম্পক উন্নয়নে জাপান ডে এর মত এ ধরণের আয়োজন তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন আয়োজক কর্তৃপক্ষ।