সিনিউজ ডেস্ক: ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য নিজের প্রচেষ্টাকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারলে মানুষকে নিরাশ হতে হয় না। সঠিক প্রশিক্ষণ, প্রকৃত দিক নির্দেশনা এবং কারিগরি শিক্ষায় নিজেকে সমৃদ্ধ করা এখন ফোরআইআর যুগের অন্যতম মূলমন্ত্র। হাতে কলমে শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। ছোট একটি প্রশিক্ষণ থেকে মানুষের ভাগ্য বদলে যেতে পারে। দরকার শুধু একাগ্রতা ও প্রযুক্তির সাথে সঠিক বন্ধুত্ব।
হার্ডওয়্যার সার্ভিস খাতে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষে বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল(বিপিসি) এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস) এর যৌথ উদ্যোগে ‘প্র্যাকটিক্যাল অ্যান্ড ল্যাব বেইজড ওয়ার্কশপ ফোকাস অন নিউ এন্টাপ্রোনারশিপ/ জব ক্রিয়েশন ইন কম্পিউটার হার্ডওয়্যার সার্ভিসিং’ শীর্ষক ৮ দিনব্যাপী দ্বিতীয় পর্বের প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন করেন বিসিএস সহ-সভাপতি মো. রাশেদ আলী ভূইয়া।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিসিএস সহ-সভাপতি বলেন, আমি রাজনীতি বিজ্ঞানে সম্মান এবং সম্মানোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছি। কখনো চিন্তা করিনি তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে আমার কর্মজীবন শুরু হবে। আমি স্নাতকে ভর্তি হওয়ার পর আমার মা আমাকে প্রযুক্তিপণ্য বিষয়ে একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করার জন্য নির্দেশ দেন। সেই প্রশিক্ষণ থেকেই আমার প্রযুক্তিপণ্যের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হয়। পড়াশোনা শেষে আমি আরো একটি কর্মশালায় অংশগ্রহণ করি। সেই থেকে শুরু করে আজ আমি স্টারটেক অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের নেতৃত্ব দিচ্ছি। তাই যেকোন প্রশিক্ষণে গুরুত্বের সাথে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারলে জীবনকে বদলানো সম্ভব। এই কর্মসূচী থেকে শিক্ষার্থীরা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের বীজ নিজের মনে বপণ করতে পারবে বলেই আমরা আশাবাদী।
বিসিএস এর নব-নির্বাচিত কোষাধ্যক্ষ আনিসুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের চেয়েও পিছিয়ে পড়া অনেক দেশ শুধু সার্ভিস খাতকে গুরুত্ব দিয়ে দেশের যুব সমাজের কর্মদক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করেছে। আমরাও বিশ্বাস করি চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে হার্ডওয়্যার নির্ভর অত্যাধুনিক প্রযুক্তির যন্ত্র পরিচালনা, সংযোজন, প্রতিস্থাপন অথবা মেরামতের ক্ষেত্রে আমাদের যুব সমাজ নিজেদের সম্পৃক্ত করে স্মার্ট বাংলাদেশকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে।
বিসিএস এর নব-নির্বাচিত পরিচালক মো. মনজুরুল হাসান বলেন, বিসিএস বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে প্রতিনিয়ত প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করে থাকে। সার্ভিসিং খাতে আমাদের প্রচুর দক্ষ জনশক্তির চাহিদা রয়েছে। আমরা কোর্সটিকে এমনভাবে সাজিয়েছি যেন একজন প্রশিক্ষণার্থী সহজেই মাদারবোর্ড রিপেয়ারিং এর প্রাথমিক ধারণা পেতে পারে। মেরামত শিল্পকে গুরুত্ব দিতে পারলে আমরা ই-বর্জ্যকেও সম্পদে রুপান্তর করতে পারবো। আন্তর্জাতিক প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠানরাও এখন পণ্য মেরামতের জন্য বাংলাদেশকে গুরুত্ব দিচ্ছে। এই খাতে জীবিকা নির্বাহ বা চাকরির যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। দরকার শুধু দক্ষতা।
বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিলের সহকারী পরিচালক মো. ফয়সাল খান বলেন, প্রথমবারের আয়োজনে বিসিএস সদস্যদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে। দ্বিতীয় পর্বেও আমরা প্রচুর সারা পেয়েছি। এতবেশি আগ্রহ ছিল সদস্য প্রতিষ্ঠানের যে আমরা এই বিষয়ের উপর আরো একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালা পরিচালনা করবো। সারা পৃথিবীতেই এখন আইটিএস বা প্রযুক্তি সেবার প্রচুর চাহিদা রয়েছে। দেশে-বিদেশে যে পরিমাণ দক্ষ লোকের প্রয়োজন তার এক তৃতীয়াংশ জনশক্তিও আমরা এখনো প্রস্তুত করতে পারিনি। তাই এই প্রশিক্ষণকে গুরুত্বের সঙ্গে নিতে পারলে আমরাই তৈরি করবো দক্ষ জনোবল। এতে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সম্ভাবনাও বৃদ্ধি পাবে।
নিউটেক আইটি ট্রেনিং সেন্টার (এনআইটিসি) এর প্রধান প্রশিক্ষক মো. গিয়াস উদ্দিন হাওলাদার বলেন, প্রশিক্ষণ কর্মশালা পরিচালনা করতে আমরা আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষক দিয়ে এবারের কার্যক্রম পরিচালনা করবো। কোর্সটিকে আমরা এমনভাবে সাজিয়েছি যেন এই কোর্স শেষ করে একজন প্রশিক্ষণার্থী মাদারবোর্ড সারানোর সম্যক ধারণা অর্জন করতে পারে। প্রশিক্ষণের পরেও আমরা ভিডিও প্রশিক্ষণ শিক্ষার্থীদের সরবরাহ করবো। এতে নিজে নিজেও একজন শিক্ষার্থী পরবর্তী ধাপের দক্ষতা অর্জন করতে পারবে।
প্রসঙ্গত, ২৪ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া এই কর্মশালা ২ মে পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলমান থাকবে। কর্মশালার শেষ দিনে প্রশিক্ষণের সনদপত্র বিতরণের মাধ্যমে কর্মশালার সমাপ্তি ঘটবে।