নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনে বাংলাদেশে নতুন পণ্য ও সেবা আনল হুয়াওয়ে

সিনিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনকে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশে পাঁচটি আধুনিক পণ্য ও সেবা নিয়ে এসেছে হুয়াওয়ে। ঢাকাস্থ হুয়াওয়ে বাংলাদেশ একাডেমিতে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে সম্প্রতি আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে হুয়াওয়ের ডিজিটাল পাওয়ার বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তারা ও ইপিসি (ইঞ্জিনিয়ারিং, প্রকিওরমেন্ট অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন) সহযোগীরা উপস্থিত ছিলেন।

 

আধুনিক পণ্য ও সেবাগুলোর মধ্যে রয়েছে দুইটি ইনভার্টার, দুইটি এনার্জি স্টোরেজ সিস্টেম ও একটি এআই-চালিত এনার্জি ম্যানেজমেন্ট অ্যাসিস্টেন্ট। এগুলোর ব্যবহার বাংলাদেশকে এর নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনে সহযোগিতা করবে।  হুয়াওয়ের নতুন ইনভার্টারগুলো হলো সান২০০০-১৫০কে-এমজি০ ও সান২০০০-১২-২৫কেটিএল-এমবি০ এবং ইনার্জি স্টোরেজ সিস্টেমগুলো হলো ২এমডব্লিউএইচ ইএসএস ও এলইউএনএ২০০০-৭/১৪/২১-এস১। এছাড়া সর্বাধুনিক এআই-চালিত এনার্জি ম্যানেজমেন্ট অ্যাসিস্টেন্ট হিসেবে এসেছে ইএমএমএ-এ০২।

 

উক্ত অনুষ্ঠানে হুয়াওয়ে বাংলাদেশের ডিজিটাল পাওয়ারের ম্যানেজিং ডিরেক্টর নিক্সিয়াওপেং বলেন, “আমাদের সহযোগী ও গ্রাহকদের জন্য আমরা এমন সব উন্নত প্রযুক্তি নিয়ে আসতে চাই যেগুলি তাদের চাহিদা অনুযায়ী সেবা দিতে পারবে। এই পাঁচটি পণ্যে অত্যাধুনিক সেফটি ফিচারসহ জ্বালানী সাশ্রয়ের জন্য অপ্টিমাইজেশনের সুবিধা রয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, এগুলো বাংলাদেশের ডিজিটাল পাওয়ার খাতকে আরও মজবুত করবে।”

 

ইনভার্টারগুলোতে রয়েছে উন্নত সব সেফটি ফিচার। এগুলোতে প্রথমবারের মতো ব্যবহার করা হয়েছে পিভি গ্রাউন্ড-ফল্ট প্রোটেকশন, যা গ্রিড কানেকশনের সময় গ্রাউন্ড-ফল্ট  সনাক্ত করে ১৫ মিলিসেকেন্ডের মধ্যে ভূপৃষ্ঠের সাথে সংযোগ বিছিন্ন করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। এছাড়া ইনভার্টারগুলোতে ডিসি ও এসি উভয় দিকে কানেক্টরের তাপমাত্রা নিরীক্ষা করার জন্য রয়েছে স্মার্ট কানেক্টর টেম্পারেচার ডিটেকশন। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা প্রতিরোধ করার জন্য এই প্রযুক্তি অতিরিক্ত তাপমাত্রা সনাক্ত হওয়ার ০.৫ সেকেন্ডের মধ্যে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইনভার্টার বন্ধ করে দেয়।

 

এছাড়া অগ্নি নির্বাপনের জন্য এই ইনভার্টারগুলিতে সর্বোচ্চ মানের এএফসিআই আর্ক প্রটেকশনসহ রয়েছে অ্যাকটিভ আর্ক এক্সটিংগুইশিংয়ের (উচ্চ মাত্রার বিদ্যুৎ প্রবাহ সনাক্ত ও বাধা দেওয়ার ক্ষমতা) ব্যবস্থা। এটি সনাক্তকরণের সীমা ৪৫০ মিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি করে, যা লার্জ-স্কেল সিঅ্যান্ডআই অ্যাপ্লিকেশনের জন্য উপযুক্ত। এর বিশেষ স্মার্ট স্ট্রিং-লেভেল ডিসকানেক্ট ফিচার দক্ষতা ও দ্রুততার সাথে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ডিসির দিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। এই ইনভার্টারগুলো আউটপুট পাওয়ার ৫০ শতাংশ বাড়িয়ে একটি প্রকল্পের খরচ কমাতে পারে।

সান২০০০-১২-২৫কেটিএল-এমবি০ বসতবাড়িতে ব্যবহারের উপযোগী একটি হাইব্রিড ইনভার্টার। এতে ১২ কিলোওয়াট ও ২৫ কিলোওয়াটের অপশন রয়েছে এবং এটি ২ এমপিপিটিএস/৪ ইনপুট ও ৩০এ/২০এ-এর হায়ার ইনপুট কারেন্ট সাপোর্ট করে। এছাড়া ইনভার্টারটি হাইব্রিড সিনারিওতে সর্বোচ্চ ১৩.২ কিলোওয়াট/২৫ কিলোওয়াটের ডিসচার্জ পাওয়ার দিয়ে বহুমুখী ব্যবহার ও কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে পারে।

 

এলইউএনএ২০০০-৭/১৪/২১-এস১-এ আছে মডিউল+ আর্কিটেকচার, যাতে রয়েছে প্যাক লেভেল ইন্ডিপেন্ডেন্ট অপ্টিমাইজেশন ও ৫ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

 

ইএমএম-এ০২ হলো হুয়াওয়ের সর্বাধুনিক এআইভিত্তিক এনার্জি ম্যানেজমেন্ট অ্যাসিস্টেন্ট, যা ওয়ানস্টপ ম্যানেজমেন্ট ও স্মার্ট কনট্রোলের মাধ্যমে বসতবাড়ির বৈদ্যুতিক যন্ত্র নিয়ন্ত্রণ করে সক্ষমতা ও গ্রাহকসেবার মান বাড়াতে সাহায্য করে।

 

হুয়াওয়ে ২০২১ সাল থেকে বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে কাজ করছে। বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদনের লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করার জন্য হুয়াওয়ের ৫০ জনের একটি নিবেদিত টিম রয়েছে। ২০২৩ সালে জাতীয় গ্রিডে সংযোজনের জন্য হুয়াওয়ে একটি ১০০ মেগাওয়াট সম্পন্ন ইউটিলিটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। পাশাপাশি মনপুরা উপজেলায় ২২ মেগাওয়াট আওয়ার ইএসএস সক্ষমতা সম্পন্ন বাংলাদেশের বৃহত্তম ও প্রথম মাইক্রো গ্রিড প্রকল্পও বাস্তবায়ন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। একইসঙ্গে, প্রতিষ্ঠানের পার্টনারদের সঙ্গে নিয়ে ৭২টিরও বেশি সোলার রুফটপ প্রকল্পের সফল বাস্তবায়ন করেছে।

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।