তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জন্য ব্যবসা ও বিনিয়োগবান্ধব বাজেটের দাবি

সিনিউজ ডেস্ক: তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জন্য ব্যবসা ও বিনিয়োগবান্ধব বাজেটের দাবি  উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় পরিবর্তন’ শীর্ষক ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে ৬ লক্ষাধিক কোটি টাকার যে বাজেট ঘোষণা করেছে তার জন্য সরকারকে অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানান বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (BMCCI)’র সভাপতি, বেসিস-এর প্রাক্তন সভাপতি ও এফবিসিসিআই পরিচালক জনাব সৈয়দ আলমাস কবীর। তিনি স্টার্টআপের জন্য ট্যাক্স রিটার্নের পাশাপাশি সমস্ত ধরণের রিপোর্টিং-এর জন্য প্রস্তাবিত ছাড়ের ফলে তারা যে চ্যালেঞ্জগুলির মুখোমুখি হয় তা সহজীকরণ করবে এজন্য মাননীয় অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। এছাড়াও, তাদের নয় বছর ধরে লোকসান দূর করে অগ্রসর হওয়ার অনুমতি দেওয়া এবং ব্যয়ের উপর বিধিনিষেধ প্রত্যাহার তরুণ উদ্যোক্তাদের তাদের ব্যবসা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। স্টার্টআপ কোম্পানিগুলির জন্য টার্নওভার ট্যাক্স ০.৬% থেকে ০.১%-এ নামিয়ে আনা নতুন ব্যবসাগুলির জন্য দারুন সহায়ক হবে৷

 

অর্থমন্ত্রী যে ডিজিটাল কারেন্সি’র স্টাডি শুরু করতে চেয়েছেন তা আমি স্বাগত জানাই। ব্লকচেইন নির্ভর ডিজিটাল কারেন্সি অর্থনীতিকে অনেক বেশি বেগবান করার পাশাপাশি স্বচ্ছতাও নিশ্চিত করবে।

 

তবে এটা খুবই নিরুৎসাহজনক যে, সকল ডিজিটাল কর্মকাণ্ডের প্রাথমিক উপাদান হওয়া সত্ত্বেও ইন্টারনেট সেবাকে আইটিইএস-এর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে প্রস্তাব করা সত্ত্বেও বাজেট বক্তৃতায় পাওয়া যায়নি। ইন্টারনেট সেবা আইটিইএসের অন্তর্ভুক্ত হলে তা ১০% AIT সহ আইএসপিগুলিকে কর্পোরেট ট্যাক্স থেকে অব্যাহতি দেবে এবং ব্যবহারকারীদের জন্য ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটকে উল্লেখযোগ্যভাবে সস্তা করে তুলবে। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ সম্প্রসারণের ফলে প্রত্যন্ত অঞ্চলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বেড়ে যাবে। সাশ্রয়ী মূল্যের ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ডিজিটাল বাণিজ্য, আইসিটি ফ্রিল্যান্সিং, আইটিইএস রপ্তানি ইত্যাদি সহ নতুন নতুন ব্যবসা তৈরি করতে সহায়তা করবে।

 

এছাড়াও আমদানিকৃত ল্যাপটপ, কম্পিউটার প্রিন্টার এবং টোনার কার্টিজের উপর ১৫% ভ্যাট প্রবর্তন অটোমেশনের বৃদ্ধি ও প্রসারকে সীমিত করবে।

সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশের চেতনায় এই বাজেট প্রণয়ন করবেন বলে তিনি আশাবাদী ছিলেন। দুর্ভাগ্যবশত, মোবাইল ব্যাংকিং, রাইড-শেয়ারিং ইত্যাদি সহ মোবাইল-ভিত্তিক পরিষেবাগুলিতে অতিরিক্ত ভ্যাট এর বিপরীত বলে প্রতীয়মান।

 

কো-ওয়ার্কিং স্পেসের উপর ৫% ভ্যাটও উদ্যোক্তা এবং স্টার্টআপদের জন্য বোঝাস্বরূপ হয়ে দাড়াবে।

 

বিদেশী প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর জন্য টাক্স রিটার্ন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে তা আমি স্বাগত জানাই। একই সাথে তারা যে দেশে নিবন্ধিত সেই দেশের সাথে আমাদের ডাবল ট্যাক্সেশন চুক্তি থেকে থাকে তা যেন সাংঘর্ষিক না হয় সেই দিকে লক্ষ রাখতে হবে।

 

জনাব আলমাস কবীর আশা করেছিলেন যে সরকার স্থানীয় আইটি শিল্পকে উত্সাহিত করতে এবং বিদেশী সফ্টওয়্যার ও পরিষেবাগুলির তুলনায় প্রতিযোগিতামূলক করতে আইটিইএস-এর উপর ১০% AIT এবং সফ্টওয়্যারের উপর ৫% ভ্যাট মওকুফ করবে। কিন্তু এর কোন প্রতিফলন দেখা যায়নি৷ ডিজিটাল পেমেন্টের উপর প্রস্তাবিত প্রণোদনা আমাদেরকে ক্যাশলেস অর্থনীতির নবদিগন্তের সূচনা করত, কিন্তু এমন কোনো প্রণোদনাও দেওয়া হয়নি। পাশাপাশি মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রমে ১২% ভ্যাটের বোঝা চাপানো হয়েছে।

 

সরকার সত্যিকার অর্থে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের প্রত্যাশিত উন্নয়নের লক্ষ্যে আমাদের প্রস্তাবসমূহ বাজেট অধিবেশনে আলোচনার মাধ্যমে বিবেচনা করবে এবং সত্যিকার অর্থে অন্যান্য খাতের পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জন্যও একটি ব্যবসা ও বিনিয়োগ বান্ধব বাজেট জাতিকে উপহার দেবে বলে প্রত্যাশা তার। এ বিষয়ে সরকারের নীতিনির্ধারক মহলে বিষয়টি তুলে ধরার ব্যাপারে গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের ইতিবাচক ভূমিকা ও আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন মালয়েশিয়া চেম্বারের সভাপতি ও বেসিসের প্রাক্তন সভাপতি আলমাস কবীর।

 

 

Click

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।