সিনিউজ ডেস্ক: ক্রমবর্ধমান তথ্য-প্রযুক্তি খাতের সঙ্গে তরুণ প্রজন্মকে যুগোপযোগী করে তুলতে ‘ওয়ান স্টুডেন্ট, ওয়ান ল্যাপটপ’ (প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য একটি করে ল্যাপটপ) প্রকল্পের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে আরও ৪ হাজার ল্যাপটপ বিতরণ কর্মসূচী শুরু করেছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইইউ)। বিশ্ববিদ্যালয়টি ২০১০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত তার শিক্ষার্থীদের মাঝে ৬৩ হাজারেরও বেশি ল্যাপটপ বিতরণ করেছে।
১৮ ডিসেম্বর (বুধবার) সকাল ১১ টায় সাভারের বিরুলিয়ায় ড্যাফোডিল স্মার্ট সিটিতে নিজেদের ক্যাম্পাসে এক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এবারের ল্যাপটপ বিতরণ কর্মসূচী শুরু করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। এসময় আয়োজনের অতিথি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এম. লুৎফর রহমান, উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. এস. এম. মাহবুব উল হক মজুমদার, রেজিস্ট্রার সহযোগী অধ্যাপক ড. নাদির বিন আলী উপস্থিত ছিলেন। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক অ্যাফায়ার্সের ডিন, অন্যান্য অনুষদের ডিন, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে।
তথ্য প্রযুক্তির ক্রমবিকাশমান ধারার সাথে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে যুগোপযোগী করে তুলতে এবং প্রতিযোগীতামূলক চাকরির বাজারে শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘ওয়ান স্টুডেন্ট, ওয়ান ল্যাপটপ’ কর্মসূচীটি ২০১০ সাল থেকে শুরু করে ডিআইইউ। এই কর্মসূচীর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার ও আধুনিক বিশ্বের সব সুবিধা গ্রহণের ক্ষেত্রে বৈষম্য কমিয়ে আনবে বলে মনে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন। পাশাপাশি এই ল্যাপটপ ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা তাদের উদ্ভাবনী দক্ষতা বৃদ্ধি এবং ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আরও প্রস্তুত হয়ে উঠবে বলে মনে করেন অনুষ্ঠানের উপস্থিত অতিথিরা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিআইইউ’র এই উদ্যোগের প্রশংসা করে প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ডিআইইউ-এর এই উদ্যোগ একটি প্রজন্মকে ডিজিটাল দক্ষতায় সমৃদ্ধ করার অসাধারণ পদক্ষেপ। শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তি দিয়ে ক্ষমতায়ন করার মাধ্যমে শিখন পদ্ধতির উন্নয়নের পাশাপাশি বৈশ্বিক চাকরির বাজারে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে রাখতে সাহায্য করবে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের এই উদ্যোগকে নির্দ্বিধায় সাধুবাদ জানাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘জুলাইয়ের এই গণ-অভ্যুত্থানের সময় আমরা এই তরুণ প্রজন্মকে প্রযুক্তির সর্বোচ্চ এবং যথোপযুক্ত ব্যবহার করতে দেখেছি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও প্রযুক্তিগত উন্নয়নের পাশাপাশি গুণগত মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিতের ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখার সময় এসেছে। বর্তমানের ইউজিসি’র সদস্যরা এই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।’
এসময় ডিআইইউ উপাচার্য বলেন, ‘বর্তমান যুগের শিক্ষা ব্যবস্থায় ল্যাপটপের মতো প্রযুক্তির ব্যবহার খুবই সাধারণ ব্যাপার হয়ে উঠেছে। এই যন্ত্র ছাড়া নিজেকে গতানুগতিক প্রতিযোগিতায় টিকিয়ে রাখাই মুশকিল, তাছাড়া বিশ্বমঞ্চেও নিজেকে প্রমাণের জন্য এর ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ড্যাফোডিল কম্পিউটার্সের লিমিটেডের এই ল্যাপটপটি একজন শিক্ষার্থীর ব্যবহারের জন্য যথেষ্টই মানসম্পন্ন। তবে খেয়াল রাখতে হবে, এর অপব্যবহার যাতে না হয়।’
কর্মসূচীর প্রথম দিনেই ৭০০ শিক্ষার্থীকে ল্যাপটপ প্রদান করা হয় এবং বাকিদেরও ধাপে ধাপে ল্যাপটপ বিতরণ করা হবে। ইতিমধ্যে, ডিআইইউ বিগত এক যুগেরও বেশি সময়ে ৬৩ হাজারের বেশি ল্যাপটপ বিতরণ করেছে, যা প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষা প্রদানের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
বিশ্ববিদ্যালয়টির মাল্টিমিডিয়া অ্যান্ড ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি (এমসিটি) বিভাগের ল্যাপটপ গ্রহণকারী একজন শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান ইলা তার অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, ‘এই ল্যাপটপটি আমার পড়াশোনার জন্য খুবই সহায়ক হবে। সবার বাসাতে নিজেদের ব্যক্তিগত ল্যাপটপ বা কম্পিউটার থাকে না, তাদের সাধারণত ল্যাবে কাজ করতে হয় নিজেদের অনুশীলনের জন্য। তবে এবার অবশ্যই এই ল্যাপটপের মাধ্যমে আমাদের পড়াশোনায় ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।’
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ‘ওয়ান স্টুডেন্ট, ওয়ান ল্যাপটপ’ কর্মসূচির প্রধান উদ্দেশ্য হল শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তির সাথে মানিয়ে নিতে সাহায্য করা এবং আধুনিক শিক্ষার সাথে সংযুক্ত রাখা। ল্যাপটপ এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সহজেই অনলাইন রিসোর্স, একাডেমিক ক্যালেন্ডার, আর্থিক লেনদেনের তথ্য ব্যবহার করতে পারে এবং অনলাইন ক্লাসেও অংশগ্রহণ করতে পারে।