সিনিউজ ডেস্ক: বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ১০ম সমাবর্তন আজ ৯ ফেব্রæয়ারি (বৃহস্পতিবার) বিরুলিয়ায় ড্যাফোডিল স্মার্ট সিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের প্রতিনিধি হিসেবে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, এম.পি। এতে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন ভারতের হিমাচল প্রদেশের শোলিনী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর অতুল খোসলা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখবেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম লুৎফর রহমান। ভ্যালিডেকটোরিয়ান বক্তব্য প্রদান করেন আইন বিভাগের গ্র্যাজুয়েট সাইফুল ইসলাম।
এবারের সমাবর্তনে ৬১৬৪ জন গ্র্যাজুয়েটকে ডিগ্রী প্রদান করা হয়। এছাড়াও অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল অর্জনকারী ১২ জন গ্র্যাজুয়েটকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ‘স্বর্ণপদক’ প্রদান করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, সমাবর্তনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো আপনাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা। এখন আপনাদের অর্জিত শিক্ষা দেশ ও দশের কল্যাণে কাজে লাগানোর পালা। আপনাদের অর্জিত শিক্ষা সমাজ ও দেশের কোন কাজে না আসলে সেটা হবে একটা অনেক বড় অন্যায় এবং আপনাদের বাবা মা, শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বিত প্রচেষ্টার একটা বিরাট অপচয়। সুতরাং, আজ আপনারা প্রতিজ্ঞা করুন, আপনারা যা পেয়েছেন, তার বহুগুণ দেশকে ফিরিয়ে দেবার চেষ্টা করবেন। সেই সাথে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনেও অবদান রাখবেন।
তিনি বলেন, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ইতিমধ্যে শিক্ষার পরিবেশ, গুনগত মান, শিক্ষা প্রদান সংক্রান্ত সকল কর্মক্ষমতা এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শর্ত পূরণ করে স্থায়ী সনদ ও অর্জন করেছে। নাসা আয়োজিত আন্তর্জাতিক হ্যাকাথন নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০২২ প্রতিযোগিতায় ১৬২টি দেশের ২৮১৪ দলের মধ্যে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের দল ‘টিম ডায়মন্ডস’ ‘মোস্ট ইন্সপিরেশনাল’ প্রোজেক্ট হিসেবে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। সর্বশেষ বঙ্গবন্ধু আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় স্পোর্টস চ্যাম্পিয়নশীপে ১২৫ টি সরকারি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশগ্রহণে ২১ টি ইভেন্টের মধ্যে ১২ টি স্বর্ন, ৮টি রৌপ্য ও ৭টি ব্রোঞ্জ পদক পেয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। এসব অর্জন এটাই প্রমান করে যে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শুধু লেখাপড়ায় নয়, ক্রীড়াক্ষেত্রে ও সমান পারদর্শী। শুধু তাই নয়, বিশ্বখ্যাত টাইমস হায়ার এডুকেশন ইমপ্যাক্ট র্যাঙ্কিং, কিউএস ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিং, ইউআই গ্রীন ম্যাট্্িরক্স র্যাংকিংয়ে ও এ বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান। আমি আশা করি, ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় তাদের উন্নয়নও অগ্রযাত্রার এ ধারা অব্যাহত রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
সমাবর্তন বক্তার বক্তৃতায় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে প্রফেসর অতুল ঘোষলা বলেন, আপনার পরিকল্পনা অনুযায়ী জীবন চলে না। আপনি প্রত্যেকে উচ্চ এবং নিম্ন, কঠিন এবং সহজ, এবং, দুঃখজনকভাবে, মাঝে মাঝে অনেক চ্যালেঞ্জর মুখোমুখী হতে পারেন এবং জীবন যথেষ্ট মসৃণ নৌযান নাও হতে পারে। আপনি কীভাবে উভয় পরিস্থিতি পরিচালনা করবেন তা আপনার সাফল্যের প্রকৃত স্তর নির্ধারণ করবে।
তিনি বলেন, আপনি যদি আপনার জীবদ্দশায় কোনো শীর্ষ মাল্টিন্যাশনাল বা স্মার্ট কর্পোরেটের সিইও পদে না উঠতে পারেন, তাতেও সমস্যা নেই। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আপনি ইতিমধ্যে আরও আশাবাদী ভবিষ্যত তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করেছেন কি না। পরিবর্তন এবং বাধাগুলির সাথে সামঞ্জস্য করার আপনার ক্ষমতা প্রতিটি পাঠ, ল্যাব সেশন, ক্লাস পরীক্ষা, প্রকল্পের কাজ বা গবেষণা, মধ্য-সেমিস্টার এবং আপনার সম্পূর্ণ করা প্রশংসাপত্রের চূড়ান্ত পরীক্ষার মাধ্যমে চাষ করা হয়েছে কি না।
স্বাগত বক্তব্যে ডিআইইউ চেয়ারম্যান ড. মোঃ সবুর খান বলেন, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি শিক্ষা ব্যবস্থায় উদ্ভাবনকে অনুঘটক মনে করেছে এবং এর একাডেমিক সিস্টেমের সম্পূর্ণ ডিজিটাল রূপান্তর নিশ্চিত করেছে। আমরা আধুনিক ফ্ল্যাগশিপ ইউনিভার্সিডঁ হিসেবে বিকাশের জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি, অ্যাক্সেস এবং ইক্যুইটির প্রতি নিষ্ঠার সাথে কাজ করছে এবং উল্লেখযোগ্যভাবে শিক্ষাদান, শেখার, গবেষণার মান এবং জাতীয় ও আঞ্চলিক আর্থ-সামাজিক চাহিদা মেটাতে কাজ করে যাচ্ছে।” বলে সন্তব্য করেন।
তিনি আরও বলেন, ড্যাফোডিল বিশ^বিদ্যালয় বাংলাদেশে প্রথম ও একমাত্র উদ্ভাবনী বিষয়ক কোর্স চালু করেছে, একাডেমিয়া–শিল্প সম্পর্ক জোরদার করেছে, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সম্প্রসারিত করেছে, শিক্ষা ব্যবস্থায় উদ্ভাবন এবং সৃজনশীলতাকে একীভূত করেছে, পাঠ্য বহির্ভূত কার্যক্রমের উপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে এবং বিশ^বিদ্যালয়ের বিতরণ কার্যক্রম ব্যবস্থার সম্পূর্ণ ডিজিটাল রূপান্তর নিশ্চিত করেছে। একটি জেড জেনারেশনের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত সহায়তামূলক পরিষেবা এবং সুবিধাগুলিতে অ্যাক্সেস নিশ্চিত করে আমরা একটি ব্যাপক শিক্ষামূলক ইকো সিস্টেম তৈরি করার চেষ্টা করেছি।
তিনি বিশ^বিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক কিছু উল্লেখযোগ্য সাফল্যের গল্প উল্লেখ করে বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধু আন্তবিশ্ববিদ্যালয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছি, নাসা স্পোর্টস এপ চ্যালেঞ্জ প্রতিযোগিতায় গেøাবালী চ্যাম্পিয়ন হয়েছি, এ্ইউএপি’র ১৫তম সাধারণ সম্মেলনের আয়োজন করেছি, আমরা জব উৎসব সম্মেলনের আয়োজন করেছি, যা ছিল একটি ইউএনডিপি-স্পন্সর ইভেন্ট এবং যেখানে ২০০+ প্রতিষ্ঠান ছাত্রদের কর্মসংস্থান খুঁজে পেতে সহায়তা করার জন্য অংশগ্রহণ করেছিল।
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বর্তমানে “ডোয়ার্স এবং লিডারস” বিকাশের উপর সর্বোচ্চ মনোযোগ নিবদ্ধ করছে যারা এ গ্রহের জন্য একটি টেকসই বর্তমান এবং প্রতিশ্রæতিশীল ভবিষ্যত প্রতিষ্ঠা করার জন্য উদ্ভাবন এবং সমাজের জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করবে।