সিনিউজ ডেস্ক: ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ডিআইইউ) শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে নতুন উদ্যোক্তা খুঁজে পাওয়া ও তাদের মাধ্যমে দেশের ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্পখাতে একটি নতুন ধারা সৃষ্টির লক্ষ্য নিয়ে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) ডিআইইউ ক্যাম্পাসে তাদের নিজস্ব সেবাকেন্দ্র চালু করেছে। ডিআইইউ ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান ও বিসিকের চেয়ারম্যান মুহ. মাহবুবুর রহমান যৌথভাবে আজ (০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩) এ ‘শিল্প সহায়তা কেন্দ্রে’র আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এ উপলক্ষে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিআইইউর উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. লুৎফর রহমান। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ডিআইইউর ব্যবসায় ও উদ্যোক্তাবৃত্তি অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. মাসুম ইকবাল। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডিআইইউর ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইনোভেশন সেন্টারের প্রকল্প পরিচালক আবু তাহের খান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিসিক চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান বলেন যে, দেশে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পখাতের বিকাশ ও উন্নয়নের লক্ষ্যে বিসিক সেই ১৯৫৭ সাল থেকেই কাজ করে আসছে, যেখানে উদ্যোক্তাদের মধ্যে অন্যতম ছিল ঐতিহ্যবাহী কারুশিল্পী ও হস্তশিল্পের কারিগরেরা। পরবর্তীতে এর সাথে নানা ধারার অপেক্ষাকৃত বড় উদ্যোক্তারা যুক্ত হলেও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা শিক্ষিত যুবকেররা কখনোই মূলধারার উদ্যোক্তা হয়ে ওঠতে পারেনি। কিন্তু বিসিক এবার সেটি করে দেখাতে চায় এবং সে লক্ষ্য নিয়েই ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির মেধাবী তরুণ উদ্যোক্তাদেরকে উপজীব্য করে এ ক্ষেত্রে একটি নতুন ধারা সৃষ্টির কাজ শুরু করা হলো। আর তারই ধারাবাহিকতায় ডিআইইউ ক্যাম্পাসে বিসিকের সেবাকেন্দ্র চালু করা হলো। এ ক্ষেত্রে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির সহযোগিতার কথা উল্লেখ করতে যেয়ে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদেরকে প্রচলিত ধাঁচের চাকরির বাজারের দিকে ঠেলে না দিয়ে ডিআইইউ যে তার স্নাতকদেরকে উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য পরামর্শ দিচ্ছে এবং এ কাজে পুঁজি, প্রশিক্ষণ ইত্যাদির মতো গুরুত্বপূর্ণ উপকরণেরও ব্যবস্থা করছে, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। ডিআইইউ ক্যাম্পাসে বিসিকের শিল্প সহায়তা কেন্দ্র স্থাপন করতে দেয়াকে তিনি সরকারি ও বেসরকারি খাতের মধ্যকার পারস্পরিক সহযোগিতার একটি চমৎকার উদাহরণ হিসেবেও বর্ণনা করেন।
ডিআইইউ ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান তার ভাষণে বলেন, ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই এটিকে উদ্যোক্তামুখী উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার ব্যাপারে আপ্রাণ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আর এর ফলশ্রুতিতে ডিআইইউ স্নাতকদের একটি বড় অংশই এখন ব্যবসায় ও অর্থনৈতিক খাতে নানা ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত উদ্যোক্তা এবং তাদের কেউ কেউ যথেষ্ট খ্যাতিমানও। ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে বিসিকের শিল্প সহায়তা কেন্দ্র স্থাপনের জন্য বিসিককে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন যে, বিসিক যেমনি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদেরকে নিয়ে কাজ করছে, ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থী-উদ্যাক্তারাও তেমনি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা হিসেবে তাদের যাত্রা শুরু করছে। অতএব এ দুই প্রতিষ্ঠান যদি একসাথে মিলে কাজ করে, তাহলে দেশের ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্পের উপর তার ইতিবাচক প্রভাব পড়তে বাধ্য।
ডিআইইউ উপাচার্য অধ্যাপক লুৎফর রহমান তাঁর সভাপতির ভাষণে বলেন, এ দেশের শিক্ষিত তরুণদের একটি বড় অংশকে যদি উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলা যায়, তাহলে এ দেশের অর্থনীতিতে তা বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনে দিতে সক্ষম। বস্তুত এ ধারণাকে বিবেচনায় রেখেই ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি তার শিক্ষার্থীদেরকে গড়ে তোলার জন্য নানাভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে ডিআইইউ ক্যাম্পাসে স্থাপিত বিসিকের শিল্প সহায়তা কেন্দ্র ব্যাপকভাবে সহায়ক হবে বলে আশা করা যায়।
বিসিক ও ড্যাফোডিল উভয় সূত্র থেকেই জানা যায় যে, বিসিকের জেলা ও প্রধান কার্যালয় থেকে উদ্যোক্তারা সাধারণভাবে যেসব সেবা সহায়তা পেয়ে থাকেন, ডিআইইউ ক্যাম্পাসে স্থাপিত বিসিক শিল্প সহায়তা কেন্দ্র থেকেও সেসব সেবার সবই পাওয়া যাবে। উল্লেখ্য যে, বিসিকের উল্লিখিত সেবা সহায়তাসমূহের মধ্যে রয়েছে, শিল্প নিবন্ধন, প্রশিক্ষণ, শিল্পপ্লট বরাদ্দদা, ঋণ, কর ও শুল্ক মওকুফ সুবিধা পাওয়ার জন্য সুপারিশ, আমদানি প্রাধিকারের (এনটাইটেলমেন্ট) জন্য সুপারিশ, প্রকল্প প্রোফাইল প্রণয়ন, বিপণন সমীক্ষা প্রণয়ন মেলা ও প্রদর্শনীর আয়োজন ইত্যাদি। বিস্তারিত হবু উদ্যোক্তা শিক্ষার্থীরা এখন থেকে নিজেদের ক্যাম্পাসেই বিসিকের শিল্প সহায়তা কেন্দ্রের মাধ্যমে এসব সুবিধাদি ভোগ করার সুযোগ পাবেন।