সিনিউজ ডেস্ক: ফেব্রুয়ারি ভাষার মাস, বাংলাদেশে একটি গুরুত্বপূর্ণ পালনীয় মাস। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি একটি ভাষা, যা একটি সাংস্কৃতিক পরিচয় এবং ভাষাগত বৈচিত্র্য রক্ষার গুরুত্বকে স্বীকৃতি দিয়েছে।
দেশে ৪০টির বেশি ভিন্ন ভিন্ন ভাষা রয়েছে এবং সরকার বিভিন্ন নীতিমালা প্রণয়ন ও কর্মসূচির মাধ্যমে এসব ভাষাকে রক্ষা ও প্রচার করার চেষ্টা করছে। তবে ডিজিটাল যুগে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্ম তাদের ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের নতুন উপায় খুঁজে পেয়েছে। টিকটকের মতো প্ল্যাটফর্মগুলো তরুণদের কাছে তাদের আগ্রহের বিষয় শেয়ার করা এবং তাদের ভাষা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে তাদের আবেগ-অনুভূতি প্রকাশ করার জন্য একটি জনপ্রিয় জায়গা হয়ে উঠেছে।
টিকটকের মতো প্ল্যাটফর্মের জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকায় এটা স্পষ্ট যে, এটি এখন শুধু বিনোদনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। বরং এটি বিনোদনের বাইরে চলে গেছে। এই প্ল্যাটফর্মগুলোর মধ্যে নিজের কণ্ঠস্বর ছড়িয়ে দেওয়া, বিভিন্ন সংস্কৃতির প্রচার করা এবং সেই সাথে বিশ্বের নানা দেশ থেকে মানুষকে সংযুক্ত করার ক্ষমতা রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, টিকটকে এমন ক্যাম্পেইন সৃষ্টি হয়েছে যেগুলো ভাষা ও সংস্কৃতি উৎসর্গ এবং উদযাপন করে। এভাবেই এই প্ল্যাটফর্মটি এমন একটি জায়গা তৈরি করার প্রতিশ্রুতি দেখিয়েছে যেটি শুধু বিনোদনমূলক নয়, এর পাশাপাশি অনেক অর্থবহ এবং বৃহৎ হবে।
এই ফেব্রুয়ারিতে টিকটক বাংলাদেশে ভাষার মাস উদযাপনের বেশ কিছু হ্যাশট্যাগ উন্মোচন করে। এর মধ্যে রয়েছে #বইমেলা এবং #বুকটকবিডি ক্যাম্পেইন। এটির উদ্দেশ্য ছিল দেশে বই নিয়ে যেসব কমিউনিটি রয়েছে সেগুলোর কাছে দৃশ্যমান হওয়া। এসব হ্যাশট্যাগে @alligator.films (অ্যালিগেটর.ফিল্মস), @imtiazfilms (ইমতিয়াজ ফিল্মস) এবং @aphroditeinretrograde (আফ্রোদিতিএনরেট্রোগ্রেড) এর মতো ক্রিয়েটররা তাদের জনপ্রিয় বইগুলো শেয়ার করেছেন এবং বইমেলায় তাদের জনপ্রিয় স্টল সম্পর্কেও সাজেস্ট করেছেন। অপরদিকে ব্যবহারকারীরাও তাদের পড়ার তালিকায় নতুন বই যোগ করার পরামর্শ পেয়েছেন।
এছাড়া, প্ল্যাটফর্মটি ২১শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করেছে #আমারভাষা হ্যাশট্যাগে। এর মাধ্যমে @pritomhasanofficial (প্রিতম হাসান অফিসিয়াল), @fairosenawar_ (ফাইরোজ আনোয়ার) এবং @keto_bhai (কিটো ভাই) এর মতো ক্রিয়েটররা বাংলা ভাষার প্রতি তাদের ভালোবাসা প্রকাশ করে এবং তা অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করেন। দেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতি সম্পর্কে অবহিত করতে এবং বাংলা ভাষার স্বীকৃতির জন্য লড়াই করা শহীদদের সম্মান জানাতেও হ্যাশট্যাগটি ব্যবহার করা হয়েছিল।
ভাষার মাস উদযাপনের জন্য টিকটকের প্রচেষ্টাগুলোর কারনে এর ব্যবহারকারীরা উত্সাহের সাথে অংশগ্রহন করতে পেরেছেন; যারা গান এবং বইয়ের মাধ্যমে বাংলা ভাষার প্রতি তাদের ভালোবাসা প্রদর্শন করার জন্য প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করেছিলেন। বাংলা ভাষা সম্পর্কে আবেগ এবং অনুভূতি প্রকাশ করার ক্ষেত্রে নতুন প্রজন্মের জন্য একটি কেন্দ্রীয় স্থান হয়ে উঠেছে এই প্ল্যাটফর্মটি যেখানে তারা ব্যবহার করেছেন প্ল্যাটফর্মটির বিভিন্ন ডিজিটাল টুল।
উদাহরণস্বরূপ,দেশের জাতীয় বইমেলা, একুশে বইমেলা বা অমর একুশে গ্রন্থমেলা প্রদর্শন করতে সাহায্য করেছে প্ল্যাটফর্মটির #BoiMela হ্যাশট্যাগ। একুশে বইমেলা এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। নতুন লেখক এবং নতুন লেখা আবিষ্কার করার সুযোগ পাঠকরা এখানেই খুঁজে পায়। বইয়ের প্রতি ভালোবাসা আছে এমন অন্যদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করার জায়গাও এই বইমেলা।
অন্যদিকে, #BookTokBD হ্যাশট্যাগটি ব্যবহার করে মানুষ তাদের সাম্প্রতিক পড়া বইগুলো সম্পর্কে তথ্য শেয়ার করেছেন এবং যারা বইয়ের প্রতি তাদের ভালোবাসা শেয়ার করেছেন তাদের সাথে যুক্ত হতে পেরেছেন। সর্বোপরি হ্যাশট্যাগটি বইপ্রেমীদের মধ্যে কমিউনিটির অনুভূতি তৈরি করতে সাহায্য করেছে। এর ফলে, তারা তাদের মতামত এবং সুপারিশ অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করে নিতেও সক্ষম হন।
২১শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে কেন্দ্র করে #আমারভাষা হ্যাশট্যাগ ব্যবহারকারীদের সাহায্য করে। #AmarBhasha হ্যাশট্যাগটি বাংলা ভাষাকে উদযাপন করতে এবং দেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতিকে প্রচার করতে সাহায্য করেছে।
ব্যবহারকারীরা টিকটকে #আমারবাংলাদেশ হ্যাশট্যাগটির মাধ্যমে দেশের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য নিয়ে আকর্ষণীয় কনটেন্ট দেখতে পেয়েছেন। #AmarBangladesh হ্যাশট্যাগটি সৃজনশীল এবং আকর্ষণীয় কনটেন্টের একটি কেন্দ্র হয়ে উঠেছে যা দেশের সমৃদ্ধ ইতিহাস, চিরাচরিত সঙ্গীত এবং নৃত্য পরিবেশন থেকে শুরু করে ঐতিহাসিক এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ সব দৃশ্য তুলে ধরে।