সিনিউজ ডেস্ক: তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে এবং স্মার্ট টেকনোলজিস (বিডি) লিমিটেড সম্প্রতি একটি ‘আইপি নেটওয়ার্ক এডুকেশন সামিট’- এর আয়োজন করেছে। রাজধানীর গুলশানে হুয়াওয়ে বাংলাদেশ একাডেমিতে “টুওয়ার্ডস স্মার্ট বাংলাদেশ থ্রু ডিজিটাল এডুকেশন’’ শীর্ষক এ সামিটের আয়োজন করা হয়। হুয়াওয়ে’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক, তরুণ পেশাজীবী, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, আইটি হেড, শিক্ষাবিদ, গ্রাহক, সিস্টেম ইন্টিগ্রেটর, আইইইই (ইনস্টিটিউট অব ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার্স) বাংলাদেশ কমিউনিটি এবং শিক্ষার্থীরা এ সামিটে অংশগ্রহণ করেন। এ সময় প্রত্যেক বক্তা স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্য অর্জনে ডিজিটাল শিক্ষা পদ্ধতির গুরুত্বকে তুলে ধরেন।
আয়োজিত এ সামিটে শিক্ষাখাতকে একটি স্মার্ট ও ইন্টেলিজেন্ট ইকোসিস্টেমে তৈরি করার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়, যাতে স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য যে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, তা অর্জন করা সম্ভব হয়। স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য স্মার্ট নাগরিক তৈরিতে শিক্ষাখাতের স্মার্ট ট্রান্সফরমেশন বা রূপান্তর একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মতামত দেন আলোচকরা। তবে এক্ষেত্রে শিক্ষার নতুন স্মার্ট টুলস- এর জন্য নীতিমালা প্রণয়নের পাশাপাশি আইটি অবকাঠামো, সহযোগিতা, এডুকেশন ইকোসিস্টেম অটোমেশনের প্রয়োজন রয়েছে বলে জানান তারা।
উক্ত সামিটে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি- এর ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন আইসিটি সেল- এর পরিচালক ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ফার্ম পাওয়ার অ্যান্ড মেশিনারি বিভাগের প্রফেসর ড. মো: আব্দুল আওয়াল। শিক্ষা ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কলেজ এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (সিইডিপি)- এর ন্যাশনাল কনসালটেন্ট -আইসিটি স্পেশালিস্ট মো. জাহিদুল ইসলাম (শামীম)। এছাড়া অনুষ্ঠানে স্মার্ট টেকনোলজিস (বিডি) লিমিটেড- এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম; ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর শেখ আবদুস সালাম; বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি)- এর সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদের ডিন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মোস্তফা কামাল, এসজিপি; আইইইই- এর চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামসুল আরেফিন; ব্র্যাকনেট লিমিটেড- এর সিএফও মো. সাইফুদ্দিন খালেদ এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন হুয়াওয়ে সাউথ এশিয়ার এন্টারপ্রাইজ বিজনেস গ্রুপ (ইবিজি)- এর সাউথ এশিয়া নেটওয়ার্ক বিইউ হেড মির্জা মো. আনজামুল বাশেদ (মারুফ)। তিনি শিক্ষাখাতের ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনে শিল্প বিপ্লবের গুরুত্বকে তুলে ধরেন। সেমিনারে অন্যান্য বক্তারা বিভিন্ন স্মার্ট এডুকেশন ইকোসিস্টেম সল্যুশন্স উপস্থাপন করেন। এসবের মধ্যে রয়েছে হুয়াওয়ে আইডিয়াহাব বোর্ড ২, এয়ার ইঞ্জিন ওয়াইফাই ৬ এর মতো স্মার্ট ক্লাসরুম সরঞ্জাম এবং অন্যান্য আইওটি ভিত্তিক পণ্য ও সেবা।
হুয়াওয়ে সাউথ এশিয়ার এন্টারপ্রাইজ বিজনেস গ্রুপ (ইবিজি)-এর চিফ টেকনোলজি অফিসার (সিটিও) পেং জিয়াওলেই (অ্যান্ডি) বলেন, “আইসিটি ধীরে ধীরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্মার্ট এবং আরও প্রভাবশালী শিক্ষার কেন্দ্রে পরিণত করছে। এর ফলে শিক্ষার নতুন দিকগুলোর মাধ্যমে আরও বেশি মানুষকে সেবা দেওয়া সম্ভব। যেহেতু আমরা স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি, তাই শিক্ষা খাতের আইসিটি অবকাঠামোগত উন্নয়নে আরও বেশি মনোযোগ দেয়া বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের শিক্ষা খাতের অবকাঠামোগত উন্নয়ন এই খাতকে আরও সমৃদ্ধ করবে।”
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম সেমিনারে আগত বিশিষ্ট অতিথিদের মূল্যবান বক্তব্য রাখার জন্য তাদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, “বিশ্বব্যাপী, জ্ঞান ও শেখার আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে শিক্ষা ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। প্রযুক্তিগত অগ্রগতির কারণে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও প্রশাসনের সঙ্গে জড়িত শ্রেণীকক্ষের গতিশীলতা দ্রুত পরিবর্তিত হয়েছে। শিক্ষা খাতে স্মার্ট, ইন্টেলিজেন্ট সল্যুশন্স ব্যবহার করার মাধ্যমে, বাংলাদেশও এর সুফল উপভোগ করতে পারবে।”
আইসিটি সেল- এর পরিচালক ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ফার্ম পাওয়ার অ্যান্ড মেশিনারি বিভাগের প্রফেসর ড. মো: আব্দুল আওয়াল বাকৃবি-তে হুয়াওয়ে ক্যাম্পাস নেটওয়ার্ক সল্যুশন- এর সঙ্গে তাদের ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন যাত্রার অভিজ্ঞতার কথা জানান। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইপি + পিওএল সল্যুশন প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করেছে হুয়াওয়ে ক্লাউড ক্যাম্পাস সল্যুশন। তাদের অল-সিনারিও কনভারজেন্সের মাধ্যমে সেখানে একটি গ্রিন ক্যাম্পাস নেটওয়ার্ক তৈরি করা হবে। এক্ষেত্রে ইউনিফায়েড ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে নেটওয়ার্কগুলি কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়। ফলে কম পরিচালন খরচ, উচ্চ কর্মক্ষমতাসম্পন্ন এলএএন এবং সফল ইন্টিগ্রেশন নিশ্চিত করা যায়। এটি ‘সিঙ্গেল সাইন-অন’ এর নিশ্চয়তা দেয় যা এ ইন্ডাস্ট্রির ক্ষেত্রে অনন্য।”
এখন পর্যন্ত, হুয়াওয়ে ১২০ টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে ২,৮০০ টিরও বেশি শিক্ষা বিভাগ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ডিজিটালাইজ করতে সাহায্য করেছে। ভবিষ্যতেও, হুয়াওয়ে শিক্ষাক্ষেত্রে উদ্ভাবন ও ডিজিটালাইজেশনকে সহজতর করতে কাজ করে যাবে।