এআই প্রযুক্তি সমৃদ্ধ ওয়াশিং মেশিনে কাপড় ধোয়া এখন আরও সহজ

সিনিউজ ডেস্ক: এমন এক যুগে বাস করছি, যেখানে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ছুটতে হয় ঘোড়দৌড়ের মত পাল্লা দিয়ে। এই ব্যস্ততম সময়ে গৃহস্থালির কাজ ঠিকঠাকভাবে করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এখন অনেক ক্ষেত্রেই পরিবারে স্বামী-স্ত্রী উভয়কে কাজ করতে হয়। এর ফলে ঘরের কিছু মৌলিক কাজ যেমন, রান্না করা, ঘর পরিষ্কার করা, কাপড় ধোয়া ও ইস্ত্রি করা, ইত্যাদি কাজ করতে বেগ পেতে হয়।

গৃহস্থালির অন্যতম সময়সাপেক্ষ কাজ হল কাপড় ধোয়া এবং ইস্ত্রি করা। ব্যস্ত শহুরে জীবনে যেটুকু সময় পাওয়া যায় সেটাও যেন চলে যায় কাপর ধোয়া আর শুকানোর ঝামেলায়। এক্ষেত্রে এখন ভরসা ও স্বস্তির সমার্থক হয়ে উঠেছে ওয়াশিং মেশিন। এরপরও অনেক সময়েই দেখা যায় মেশিনে কাপড় ধোয়াটাও সময়মত হয়ে উঠে না।

দৈনন্দিন জীবনের এ সমস্যাগুলো সমাধানে বাজারে এসেছে কিছু অত্যাধুনিক প্রযুক্তির স্মার্ট ওয়াশিং মেশিন। এই মেশিনগুলো যে শুধু প্রতিদিনের ঝামেলা কমিয়ে আনবে তা-ই নয়, এগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে কাপড় ধোয়ার কাজটিকে করেছে আরও সহজ ও স্মার্ট। আধুনিক প্রযুক্তির সেন্সর, মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদম ও ডেটা অ্যানালিটিক্স থাকায় নতুন এই মেশিনগুলো যেমন বিদ্যুৎ সাশ্রয় করছে, তেমনি এ অ্যাপ্লায়েন্স ব্যবহার করাও সহজ।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন ওয়াশিং মেশিনে বেশ কিছু ফিচার যুক্ত করা হয়েছে, যার মধ্যে স্মার্ট লোড ডিটেকশন, ফেব্রিক আইডেন্টিফিকেশন ও সিস্টেম-কাস্টমাইজড সাইকেল অপ্টিমাইজেশন অন্যতম। এসব ফিচার পানি ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের মাধ্যমে কাপড় পরিষ্কার করে, সেই সাথে মেশিনে ধোয়ার ফলে আগে কাপড়ের যে স্বাভাবিক ক্ষতিটুকু হত, তা থেকে সম্পূর্ণ নিরাপদ রাখে। যেমন, সিল্কের কাপড় দিলেও সেটা মেশিন নিজ থেকে শনাক্ত করে সে অনুযায়ী সেটিংস ঠিক করে নেয়। পাশাপাশি, আরেকটি বৈশিষ্ট্য হল, এ মেশিনগুলো ব্যবহারের সময় ডিটারজেন্ট কি পরিমাণে দেয়া লাগবে তা নিয়ে আর দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভুগতে হবে না; মেশিনের সিস্টেম সয়ংক্রিয়ভাবে সঠিক পরিমাণ ডিটারজেন্ট ব্যবহার করে নিবে এবং অতিরিক্ত হয়ে গেলে তা সংরক্ষণ করে রাখবে।

ওয়াশিং মেশিনের একটি বিরক্তিকর দিক হল, এটি ব্যবহারের সময় স্বাভাবিকভাবেই যান্ত্রিক শব্দ হয়। বর্তমান সময়ের প্রযুক্তি শব্দবিহীন পরিষ্কারের সুবিধাও দিবে। অর্থাৎ, প্রয়োজনে মাঝরাতেও শব্দ ছাড়া, অন্যের ঘুম না ভাঙিয়ে কাপড় ধুয়ে শুকিয়ে ফেলা যাবে। আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন ওয়াশিং ব্যবহার করা হয়েছে ‘ডিজিটাল ইনভার্টার টেকনোলজি’ ও ‘ভিয়ারটি প্লাস’ প্রযুক্তি, যা শক্তিশালী ম্যাগনেট ব্যবহার করে কম শব্দে এবং কম কম্পনে কাপড় পরিষ্কার করে।

উপরোক্ত বৈশিষ্ট্যগুলো ছাড়াও, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন ওয়াশিং মেশিনে স্মার্টফোনের অ্যাপের মাধ্যমে সহজে নিয়ন্ত্রণ করার পদ্ধতি রয়েছে। যেকোন জায়গা থেকে স্যামসাংয়ের স্মার্টথিংস অ্যাপ ব্যবহার করা যাবে। অ্যাপটি ব্যবহারকারী অনুযায়ী পারসোনালাইজড বিভিন্ন সাজেশন দেয় এবং ধোয়া শেষ হলে ফোনে নোটিফিকেশনও পাঠায়। ওয়াশিং মেশিন রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত জরুরি তথ্যও দেয় এই অ্যাপ। এতে করে ব্যবহারকারী পুরো মেশিনের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেন এবং স্মার্ট জীবন উপভোগ করতে পারেন।

মানুষের জীবন যত আধুনিক হয়েছে, ততই মানুষের নিজের ও পরিবারের জন্য বরাদ্দ সময়ে টান পড়েছে। আর এই ব্যস্ত জীবনে যেটুকু সময় বাঁচানো যায় সেটুকুই আসলে পরম পাওয়া। প্রযুক্তি এখন কাপড় ধোয়া ও শুকানোর মত নিত্যদিনের ঝঞ্ঝাট থেকে মানুষকে কিছুটা হলেও মুক্তি দিচ্ছে। তাই, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন এই উন্নত ওয়াশিং মেশিনগুলো এখন আর বিলাসি পণ্য নয়, বরং স্মার্ট জীবনের আবশ্যক সঙ্গী।

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।