শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সিঙ্গার বাংলাদেশের আগের অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ১৩ কোটি টাকা মুনাফা হলেও চলতি অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) লোকসান হয়েছে সাড়ে ৮ কোটি টাকা। এই সময়ে কোম্পানিটির পণ্য বিক্রি থেকে আয় বেড়েছে ১২.০৮ শতাংশ। কিন্তু উৎপাদন ও সুদবাবদ ব্যয় বাড়ায় তৃতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটি লোকসানে পড়েছে। কোম্পানিটির অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
লোকসানের কারণ হিসেবে কোম্পানিটি জানিয়েছে, প্রতিযোগিতামূলক ও সংবেদনশীল বাজারে অবস্থান সুসংহত করার কৌশল হিসেবে পণ্যমূল্য উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ানো হলেও বিক্রয়মূল্য সম্পূর্ণভাবে সমন্বয় করা সম্ভব হয়নি। তবে অ্যাপ্লায়েন্সেস মার্কেটে শক্তিশালী ব্র্যান্ড হিসেবে সিঙ্গার তার অবস্থানকে আরও সুসংহত করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বৈশ্বিক দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সিঙ্গার বাংলাদেশ শক্তিশালী ব্র্যান্ড হিসেবে আরও সুসংহত করতে দৃঢপ্রতিজ্ঞ।
চলতি তৃতীয় প্রান্তিকে সিঙ্গার বাংলাদেশ পণ্য বিক্রি করে মুনাফা হয়েছে ৫১৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা, যেখানে আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৪৫৮ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। বৈশ্বিক পর্যায়ে কাঁচামালের দাম বাড়ায় উৎপাদন ব্যয়ও উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। ২০২১ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে সিঙ্গারের উৎপাদন ব্যয় ছিল মোট টার্নওভারের ৭৪.০৭ শতাংশ, যা চলতি তৃতীয় প্রান্তিকে প্রায় ৮০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। উৎপাদন ব্যয় সমন্বয়ের পর চলতি তৃতীয় প্রান্তিকে কোম্পানির মোট আয় দাঁড়িয়েছে ১০৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ১০ শতাংশ কম।
চলতি তৃতীয় প্রান্তিকে সিঙ্গারের পরিচালন ব্যয় কিছুটা বেড়েছে। বিপরীতে অন্যান্য আয় সামান্য কমেছে। চলতি তৃতীয় প্রান্তিকে কোম্পানির পরিচালন আয় দাঁড়িয়েছে ১৮ কোটি ৭২ লাখ টাকা, যেখানে আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৩৩ কোটি ১৩ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানির পরিচালন আয় ৪৩.০৫ শতাংশ কমেছে। এদিকে কোম্পানির সুদবাবদ ব্যয়ও উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। চলতি তৃতীয় প্রান্তিকে সিঙ্গারের সুদবাবদ ব্যয় হয় ১৬ কোটি ১৩ লাখ টাকা, যেখানে আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১১ কোটি টাকা। সুদ ব্যয় ও মুনাফায় কর্মীর হিস্যা সমন্বয়ের পর করপূর্ববর্তী মুনাফা দাঁড়ায় ২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। আর কর পরিশোধের পর সিঙ্গার লোকসানে পড়ে, যার পরিমাণ দাঁড়ায় সাড়ে ৮ কোটি টাকা। যেখানে কোম্পানিটি আগের বছরের একই সময়ে ১২ কোটি ৭২ লাখ টাকা নিট মুনাফায় ছিল।
এদিকে তৃতীয় প্রান্তিকে লোকসানের পরও চলতি হিসাব বছরের ৯ মাসে (জানুয়ারি- সেপ্টেম্বর) নিট মুনাফায় রয়েছে। যদিও এর পরিমাণ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় অনেক কম। চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে কোম্পানির নিট মুনাফা হয় ১৪ কোটি ৫৭ লাখ টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৫৯ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানির নিট মুনাফা কমেছে ৭৫.০৫ শতাংশ। যদিও চলতি বছরের ৯ মাসে কোম্পানির বিক্রি থেকে আয় বেড়েছে প্রায় ৯ শতাংশ। তবে এ সময় উৎপাদন, পরিচালন ও সুদবাবদ ব্যয় বাড়ায় মুনাফা সংকুচিত হয়েছে।