সিনিউজ ডেস্ক:ইউনিলিভার বাংলাদেশের (ইউবিএল) ব্যবসা বিষয়ক শীর্ষ প্রতিযোগিতা ‘বিজমায়েস্ট্রোজ-২০২১’ এর চ্যাম্পিয়ন নির্বাচিত হয়েছে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (এনএসইউ) দল ‘দ্য ডিপেন্ডেবলস’। এবারই প্রথম এনএসইউ-এর কোনো দল বিজমায়েস্ট্রোজ প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হবার গৌরব অর্জন করলো।
এছাড়া, প্রতিযোগিতায় প্রথম রানার আপ হয়েছে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি’র টিম ‘কোড রেড’। এ দলের সব সদস্যরাই নারী যারা সম্পূর্ণ ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে এসেছে। দ্বিতীয় রানার আপ নির্বাচিত হয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ’র টিম ‘লেফ্টওভার পিৎজা’। মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) রাজধানীর রেডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন হোটেলে আয়োজিত প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের নাম ঘোষণা করা হয়।
বিজয়ী দলের সদস্যরা হলেন- তাহের সাব্বির মাহুওয়ালা, আবরার মাহির আহমেদ ও আফনান সাইদ। তারা যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ইউনিলিভারের বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্ম ‘ফিউচার লিডারস লিগ (এফএলএল)- ২০২১’ এ বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করবেন। সেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনুষ্ঠিত ইউনিলিভারের এ ধরনের ‘জাতীয় প্রতিযোগিতা’য় বিজয়ী দলগুলোর সঙ্গে তারা ‘গ্লোবাল চ্যাম্পিয়নশিপ’ এর জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এছাড়া ইউনিলিভারের প্রিমিয়ার ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি প্রোগ্রাম- ‘ইউনিলিভার ফিউচার লিডারস প্রোগ্রাম’ (ইউএফএলপি) এ নিয়োগ পাওয়ার ক্ষেত্রেও অগ্রাধিকার পাবেন চ্যাম্পিয়ান দলের সদস্যরা।
এবছর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ১১৩টি দল বিজমায়েস্ট্রোজ প্রতিযোগিতার প্রথম রাউন্ডে অংশ গ্রহণ করে। কঠোর মূল্যায়ন এর মাধ্যমে সেখান থেকে ৩০টি দল সেমি-ফাইনালে এবং মাত্র ৬টি দল ফাইনাল রাউন্ডে জায়গা করে নেয়। ফাইনালে ৬টি দলের মধ্যে তুমুল প্রতিযোগিতা হয়, যেখানে আসরের চ্যাম্পিয়ন ‘দ্য ডিপেন্ডেবলস’ দলের পাশাপাশি ‘প্রথম রানার আপ’ ‘কোড রেড’ এবং ‘দ্বিতীয় রানার আপ ‘লেফ্টওভার পিৎজা’ দলের সদস্যরা নিজেদেরকে দক্ষতা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে।
প্রতিযোগিতার শীর্ষ এই তিন দলকেই ইউনিলিভার লিডারশিপ ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রামের (ইউএলআইপি) আওতায় ‘ইন্টার্ন’ হবার সুযোগ দেওয়া হবে। এছাড়া প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় রাউন্ডে উত্তীর্ণ হবার পর থেকে যারা দারুণ সফলতা দেখিয়েছে, তারাও ইউনিলিভার বাংলাদেশের ‘ট্যালেন্ট পাইপলাইন’ এ অন্তর্ভুক্ত থেকে ভবিষ্যত নিয়োগের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন।
সব ধরনের কোভিড-১৯ গাইডলাইন ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবার বিজমায়েস্ট্রোজ -২০২১ প্রতিযোগিতার গ্র্যান্ড ফিনালের আয়োজন করা হয়, যেখানে দেশের স্বনামধন্য ব্যবসায়িক নেতারা বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন। বিচারক প্যানেলে ছিলেন: বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রূপালী চৌধুরী, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) জাভেদ আখতার, এবং ইউনিলিভার কনজ্যুমার কেয়ার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কেএসএম মিনহাজ।
এ প্রসঙ্গে ইউনিলিভার বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) জাভেদ আখতার বলেন, “বিজমায়েস্ট্রোজ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আমরা আগামী দিনের ব্যবসায়িক নেতৃত্ব তৈরির প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এ উদ্যোগটি ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে ১০ লাখ দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ইউনিলিভার বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত। বাংলাদেশের তরুণদের অপার সম্ভাবনা রয়েছে এবং তারাই জাতির সবচেয়ে বড় সম্পদ। এদেশের চলমান অর্থনৈতিক অগ্রগতির শক্তিশালী ধারা আরো বেগবান করতে তরুণদের ওপর বিনিয়োগই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, যাতে তারা প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করে ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার পাশাপাশি যাবতীয় সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারে। ব্যবসার প্রকৃত সমস্যাগুলো সুরাহা করার লক্ষ্যে ফাইনালে অংশগ্রহণকারী দলের মেধাবী সদস্যরা যেসব বাস্তবসম্মত সমাধান নিয়ে হাজির হয়েছেন, সেগুলো দেখে বোঝা যাচ্ছে যে- বিজমায়েস্ট্রোজ প্রতিযোগিতাটি সত্যিকার অর্থেই তরুণদেরকে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করছে এবং শিক্ষার্থীদেরকে বাস্তব ব্যবসার রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা দিতে সক্ষম হচ্ছে।”
তরুণদের মধ্যে ভবিষ্যতের নেতৃত্ব গুণ ও বিশ্লেষণাত্মক দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গত ১৭ অক্টোবর যাত্রা শুরু করে ইউনিলিভার বাংলাদেশের ব্যবসা বিষয়ক শীর্ষ প্রতিযোগিতা ‘বিজমায়েস্ট্রোজ ২০২১’। তিন জনের দলে ভাগ হয়ে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক শেষ বর্ষের প্রায় ৩৪০ জন শিক্ষার্থী এবারের আসরে প্রথম রাউন্ডে অংশ গ্রহণ করে বাস্তব ব্যবসার প্রকৃত সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেন।
‘বিজমায়েস্ট্রোজ’ প্রতিযোগিতাটি এবছর এক যুগ এ পদার্পণ করলো। শিক্ষার্থীদের ‘বাস্তব ব্যবসার রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা’ দেওয়ার লক্ষ্যে এবার আসরের থিম রাখা হয়েছিলো- ‘নেভিগেটিং ইন দ্য নিউ নরমাল’। এছাড়া, প্রতিটি রাউন্ডেই ছিলো অনন্য একেকটি থিম এবং সমস্যা সমাধান বিষয়ে প্রতিযোগীদের সাহায্য করার লক্ষ্যে ব্যবস্থা ছিলো- লার্নিং ও মেন্টরিং সেশন।
মহামারির কঠিন সময়ে শিক্ষার্থীরা নানান প্রতিকূলতার সম্মুখীন হয়েছেন। এছাড়া ক্লাসরুমের অভিজ্ঞতা বাস্তব জীবনে কাজে লাগানোও তাদের পক্ষে সম্ভব ছিলো না। এ অবস্থায় বাংলাদেশের তরুণদের সহযোগিতার লক্ষ্যে মহামারির শুরু থেকেই নিজস্ব ডিজিটাল চ্যানেলগুলোর মাধ্যমে ক্যাম্পাসভিত্তিক কার্যক্রমের প্রসার ঘটিয়েছে ইউনিলিভার। ধারাবাহিকভাবে ক্যাম্পাসভিত্তিক তৎপরতা ও দক্ষতা উন্নয়ন সেশনের মাধ্যমে এপর্যন্ত ২০ হাজারেরও বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থীকে শেখার সুযোগ করে দিয়েছে ইউনিলিভার বাংলাদেশ।