সিনিউজ ডেস্ক: দেশের ৬৫ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ফোরজি কানেক্টিভিটি সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে সম্প্রতি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের (এমওপিএমই) সাথে পার্টনারশিপ করেছে টেক সার্ভিস লিডার ও ডিজিটাল বাংলাদেশের কানেক্টিভিটি পার্টনার গ্রামীণফোন।
এ উপলক্ষে সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন, এমপি ও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির চিফ বিজনেস অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) নাসার ইউসুফ। এছাড়াও, মন্ত্রণালয়ের সকল অতিরিক্ত ও যুগ্ম সচিব, অধিদপ্তরগুলোর মহাপরিচালক এবং গ্রামীণফোনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
ফোরজি ডেটা কানেক্টিভিটি ও ওয়াই-ফাই রাউটারের মাধ্যমে দেশের ৬৫ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কানেক্টেভিটি সুবিধা প্রদানের জন্য গ্রামীণফোনের সাথে পার্টনারশিপ করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ পার্টনারশিপের অধীনে গ্রামীণফোন প্রয়োজনীয় সকল ডব্লিউটিটিএক্স রাউটার ও ২০ জিবি ডেটা কানেক্টিভিটি সুবিধা প্রদান করবে, যা দেশজুড়ে শিশুদের শিক্ষার সুযোগ পেতে ভূমিকা রাখবে এবং দেশের অসীম সম্ভাবনা উন্মোচনে সহায়তা করবে।
এ নিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, “ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণে দেশের সব মানুষকে ডিজিটাল সেবা সুবিধার আওতায় নিয়ে আসতে বর্তমান সরকার বহুমুখী বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করছে। আমাদের ধারাবাহিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে, এবার আমরা সারাদেশের ৬৫ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কানেক্টিভিটি সল্যুশন দিচ্ছি, যা দেশজুড়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিতে ভূমিকা রাখবে এবং দেশে নতুন দিগন্তের সূচনা করবে। এ উদ্যোগটিতে পূর্ণ সহযোগিতা দেয়ার জন্য আমি গ্রামীণফোনকে ধন্যবাদ জানাই। দেশের ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের সুবিধা পেতে আমরা যৌথভাবে এ ধরনের আরো উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারবো বলে আমি আশাবাদী, যার মাধ্যমে আমরা দেশের উন্নয়নে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুযোগকে কাজে লাগাতে পারবো।”
এ বিষয়ে গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান বলেন, “তরুণদের ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করে এবং চলমান ডিজিটালাইজেশনের সুবিধা পেতে তাদের ডিজিটাল দক্ষতায় প্রশিক্ষিত করে তুলে তরুণ প্রজন্মের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার মাধ্যমে আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য বাস্তবায়িত হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে জ্ঞানের শক্তিতে আলোকিত করতে বাংলাদেশ সরকার ৬৫ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়কে ইন্টারনেটের সল্যুশনের মাধ্যমে কানেক্ট করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এটি নতুন বিপ্লবের সূচনা মাত্র এবং আমরা এই যাত্রার একটি অংশ হতে পেরে আনন্দিত। আজকের শিশুরা ভবিষ্যতে দেশের নেতৃত্ব দিবে এবং তাদের ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করে তোলার মাধ্যমে আমরা দারিদ্রমুক্ত আধুনিক জাতি হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে পারবো।”
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান বলেন, “প্রতিটি খাতেই ডিজিটাল রূপান্তরের ছোঁয়া লেগেছে এবং শিক্ষা খাতও এর বাইরে নয়। শিক্ষা খাতে ডিজিটাল রূপান্তর ত্বরাণ্বিত করতে ফোরজি কানেক্টিভিটি সল্যুশনের মাধ্যমে ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি ও দূরশিক্ষণকে সহজ করতে ধীরে ধীরে আমাদের এ ধরনের কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের পরিকল্পনা রয়েছে। এ উদ্যোগে গ্রামীণফোনের পার্টনার হতে পেরে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। প্রতিষ্ঠানটি বিগত ২৫ বছর ধরে শক্তিশালী ফোরজি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে দেশের মানুষকে উদ্ভাবনী ও সিম্প্লিফায়েড সল্যুশন দিচ্ছে।”
এ পার্টনারশিপের ফলে গ্রামীণফোন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে সকল ব্যবহারকারীকে স্মার্ট ডেটা সল্যুশন দিবে, যা প্রাথমিক শিক্ষার সিস্টেমকে ডিজিটাল হতে সহায়তা করবে এবং একইসাথে আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশ লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। এর মাধ্যমে দেশজুড়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কার্যকরী ও সমতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার সুবিধা পাবে।
এ পার্টনারশিপের মূল উদ্দেশ্য কার্যকরী ও ব্যবহার-বান্ধব ডেটা সল্যুশনের মাধ্যমে ৬৫ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়কে কানেক্ট করা। স্মার্ট স্কুলের ধারণা নিয়ে করা এ উদ্যোগ স্মার্ট সারভেইলেন্স, উপস্থিতি, অনলাইন স্কুল সহ অন্যান্য অনেক সুবিধার ওপরেও জোর দিবে, যা ওয়াই-ফাই সল্যুশনের মাধ্যমে কানেক্ট করা হবে।