এআই-ভিত্তিক উদ্ভাবনের প্রতিযোগিতা গ্রামীণফোন “ফিউচারমেকার্স”এর গ্র্যান্ড ফিনালে

সিনিউজ ডেস্ক: দেশের শীর্ষস্থানীয় টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানকারী কোম্পানি গ্রামীণফোনের আয়োজনে বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত হলো ‘ফিউচারমেকার্স’ প্রতিযোগিতার গ্র্যান্ড ফিনালে। এটি ছিল দেশের প্রথম জাতীয় পর্যায়ের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-ভিত্তিক (এআই) আইডিয়া প্রতিযোগিতা যা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা, উদ্ভাবন ও সমস্যা সমাধানের দক্ষতা প্রদর্শনের সুযোগ করে দিয়েছে।

এই উদ্যোগের লক্ষ্য ছিল সারা দেশের তরুণ মেধাবীদের এমন প্রযুক্তি-নির্ভর সমাধান তৈরি করতে উৎসাহিত করা, যা বাস্তব জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে আরও স্মার্ট ও টেকসই ভবিষ্যৎ গঠনে সহায়তা করবে।

‘ইশারা: বাংলা সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ ট্রান্সলেটর’ প্রকল্পের জন্য চ্যাম্পিয়ন হয়েছে টিম ওয়াটারমেলন। টিম ওপিয়ন তাদের ‘এআই-ড্রিভেন নিউজ ক্রেডিবিলিটি প্ল্যাটফর্ম’ প্রকল্পের জন্য হয়েছে প্রথম রানার-আপ। টিম সিন্যাপজ তাদের ‘এআই ইনক্লুশন ফর ডিফারেন্টলি-এবলড লার্নারস’ প্রকল্প এবং টিম লাস্তা তাদের ‘দিশা: ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন থ্রো এআই’ প্রকল্পের জন্য যৌথভাবে দ্বিতীয় রানার-আপ হয়েছে।  বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন বিচারকের দায়িত্বে থাকা গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইয়াসির আজমান, চিফ হিউম্যান রিসোর্সেস অফিসার সৈয়দা তাহিয়া হোসেন, চিফ বিজনেস অফিসার ড. আসিফ নাইমুর রশীদ এবং চিফ ইনফরমেশন অফিসার ড. নিরঞ্জন শ্রীনিবাসন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন গ্রামীণফোনের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির (সিইও) আজমান বলেন, “আমরা যখন এআই-নির্ভর ভবিষ্যতের দিকে অগ্রসর হচ্ছি, তখন তরুণ প্রজন্মকে সেই পরিবর্তনের নেতৃত্ব দিতে প্রয়োজনীয় দক্ষতা ও মানসিকতা অর্জনে সহায়তা করাটাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গ্রামীণফোনে আমরা এআই-কে দেখি উদ্ভাবন, উৎপাদনশীলতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির নিয়ামক হিসেবে। ‘ফিউচারমেকার্স’-এর মাধ্যমে আমরা এমন তরুণ উদ্ভাবকদের গড়ে তুলতে চাই, যারা ভবিষ্যতের কর্মশক্তিকে নেতৃত্ব দেবে এবং দেশের ডিজিটাল অর্থনীতিতে অবদান রাখবে।”

গ্রামীণফোনের চিফ হিউম্যান রিসোর্সেস অফিসার সৈয়দা তাহিয়া হোসেন বলেন, “গ্রামীণফোনে আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের ডিজিটাল ভবিষ্যৎ গঠনে আগামী প্রজন্মের উদ্ভাবকদের গড়ে তোলাটা অত্যন্ত জরুরি। ‘ফিউচারমেকার্স’ আমাদের সেই অঙ্গীকারেরই প্রতিফলন, যেখানে প্রযুক্তির মাধ্যমে অনুসন্ধান, সৃজন ও নেতৃত্ব দিতে তরুণ প্রতিভাদের অনুপ্রাণিত করা হয়। এ ধরনের উদ্যোগ তরুণদের মধ্যে উদ্ভাবনী ও সমস্যা সমাধানের মানসিকতা জাগিয়ে তুলবে এবং মানবকল্যাণে এআই ব্যবহারে তাদের উৎসাহিত করবে।”

প্রতিযোগিতার বিজয়ীরা পুরস্কারের পাশাপাশি গ্রামীণফোনের শীর্ষ প্রতিভা উন্নয়ন কর্মসূচিগুলোতে দ্রুত অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন। প্রাইজ মানির পাশাপাশি বাস্তব উদ্ভাবনী পরিবেশে কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন এবং নিজেদের ধারণা আরও পরিমার্জন করার সুযোগ পাবেন তারা, যা তাদের প্রযুক্তি খাতের ভবিষ্যত নেতৃত্ব হিসেবে গড়ে তুলবে।

দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে শুরু হয়েছিল ‘ফিউচারমেকার্স’ প্রতিযোগিতা। প্রাথমিক বাছাই পর্ব শেষে নির্বাচিত দলগুলো বিজ্ঞ বিচারক প্যানেলের সামনে তাদের এআই-ভিত্তিক ধারণাগুলো উপস্থাপন করে। বিচারকদের মধ্যে ছিলেন খাতসংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ, স্টার্টআপ উদ্যোক্তা এবং গ্রামীণফোনের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ কর্মকর্তাবৃন্দ। মৌলিকতা, বাস্তবায়নযোগ্যতা, সামাজিক প্রভাব এবং বাস্তব জীবনের সমস্যার সমাধানে এআই-এর তাৎপর্যপূর্ণ প্রয়োগ- এই কয়েকটি মানদণ্ডের ওপর ভিত্তি করে ধারণাগুলো মূল্যায়ন করা হয়।

প্রযুক্তি ও এআই-এর মাধ্যমে ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি এবং তরুণদের ক্ষমতায়নে সংকল্পবদ্ধ গ্রামীণফোন; ‘ফিউচারমেকার্স’ প্রতিযোগিতাটি আয়োজনের মাধ্যমে এই প্রতিশ্রুতিই পুনর্ব্যক্ত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল ও নৈতিক উপায়ে সমস্যা সমাধানে এআই ব্যবহারে উৎসাহিত করেছে এই উদ্যোগ। এতে প্রমাণিত হয়, একটি প্রযুক্তিনির্ভর, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অগ্রসর বাংলাদেশ গঠনে দৃঢ় প্রত্যয়ী গ্রামীণফোন।

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।