শুধুমাত্র প্রযুক্তির কল্যানেই করোনা পরিস্থিতিতেও দেশ এখনো সচল
ভয়ঙ্কর এক অভিশাপের মতো গোটা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ। উন্নত-অনুন্নত নির্বিশেষে সকল দেশই এই ভাইরাসের প্রকোপে পর্যুদস্ত। দিন দিন বাড়ছে লাশের সংখ্যা। কঠোরভাবে আরোপিত হয়েছে লক ডাউনসহ নানা বিধিনিষেধ।
আর এর প্রভাবে সারা বিশ্বেই ভয়ঙ্কর এক অর্থনৈতিক মন্দার আগমনধ্বনি শোনা যাচ্ছে। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে মানবজাতির ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভুত হয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি।
একমাত্র প্রযুক্তির সুবাদেই স্বাভাবিক জীবনযাত্রা আংশিকভাবে হলেও পালন করতে পারছে মানুষ। বাংলাদেশও তার বাইরে নয়। বর্তমান সরকার রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন হবার পর থেকেই ডিজিটাল বাংলাদেশ-এর শ্লোগান নিয়ে এগিয়ে চলেছে।
রাষ্ট্রীয় ও প্রশাসনিক নানা কর্মকাণ্ডে সক্রিয়ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি। ই-গভর্নেন্স, ই-ইনফ্রাস্ট্রাকচার, ই-স্বাস্থ্য, ই-বাণি্জ্য ইত্যাদি নানা ইতিবাচক উদ্যোগের মাধ্যমে উন্নয়নের পথে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। এ পরিপ্রেক্ষিতে এটি বলা যায়, গত এক দশকের বেশি সময় ধরে আমরা যে শক্তিশালী তথ্যপ্রযুক্তি অবকাঠামো গড়ে তুলেছি তা করোনাভাইরাসের ফলশ্রুতিতে বিরাজমান সংকটাবস্থায় আমাদের সহায়ক হিসেবে কাজ করবে। কারণ বর্তমানে ই-ক্লাসরুম, বা টেলিমেডিসিনের মতো সেবার কথা আমরা চিন্তা করতে পারছি ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার কারণেই। সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপের কারণেই এটি সম্ভব হয়েছে।
সারাদেশে প্রযুক্তি, ইন্টারনেট ও টেলিকম সেক্টরের প্রসারের কারণে, সফটয়্যার সেক্টর হোম অফিস থেকে গ্রাহদের সেবা ও অফিসিয়াল কর্মকান্ড চালাচ্ছে, বিপিও সেক্টর, ইন্টারনেট সেবা অব্যহত রয়েছে। সীমিত আকারে ই-কমার্স সেবাও অব্যহত রয়েছে।
এক প্রশ্নের জাবাবে, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার সিনিউজ প্রতিনিধিকে বলেন, টেলিকমিউনিকেশন শিল্পের অবদানেই আজ বিশ্বকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের দেশের টেলিযোগাযোগ সেক্টরের সুফল পাচ্ছে ঘোটা জাতি। আমরা ৪জি টেকনোলজির পাশাপাশি ৫জি নিয়ে কাজ করছি করোনার মতো পরিস্তিতি মোকাবেলায়।
মন্ত্রী বলেন চায়না রোবট দিয়ে করোনা রোগীকে সেবা দিচ্ছে। উত্তর কোরিয়া ৫জি দিয়ে তার দেশে করোনা রোগী শনাক্ত করে সেখানেই সেবা নিশ্চির করছে সেটাও টেলিকমিউনিকেশন এর অশিরবাদ। বাংলাদেশ টেলিকম মন্ত্রালয় কাজ করছে এরকম সেবা চালু করতে।
দেশে টেলিকম সেক্টর ও বিটিআরসি নিয়মিত কাজ চালিয়ে যাচ্ছে যাতে করে ইন্টারনেট ও টেলিকমিউনশেন সেক্টারের কোনো প্রকার সেবা থেকে গ্রাহক বঞ্চিত না হয়। উপরুন্তু সবাই ব্যান্ডউইথ ভাড়িয়ে দিয়েছে। মন্ত্রী বলেন, বর্তমান লকডাউন পরিস্থিতে টেলিকম সেক্টর তেমন ক্ষতির শিকার হওয়ার কথা নয় কারণ ভয়েস কিছুটা কমলেও মোবাইল ডেটার ব্যবহার অনেকগুনে বৃদ্বি পেয়েছে। এবং টেলিকম সেক্টরের কর্মীদের কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কিছুটা সমস্যায় পড়বে আইএসপি মানে ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। কারণ তাদের সকল কর্পোরেট গ্রাহকদের তো অফিস আদালত বন্ধ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশে একযোগে ভিডিও কনফারেন্সে নিয়মিত মিটিং করছেন। দেশের সকল শ্রেণীর মানুষ এখন দেশে বিদেশ থেকে ও ঘরে বসেই দৈনন্দিন সকল প্রকারের প্রয়োজনীয় কাজ সারতে পারছেন। অনলাইন কেনাকাটা, সরকারি সকল প্রকারের বিল ও সেবা এখন ১৭ কোটি মানুষ ভোগ করছে। ২০০৮ সালে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ ভিশন ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার, সেটা ২০০৯ সালে পরিণত হয় সরকারের ভিশনে। আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক বর্তমানে দেশে করোনা পরিস্থিতির লকডাউন অবস্থাতে ও নিয়মিত সাংবাদিক সম্মেলন করছেন, পাশাপাশি তিনি মন্ত্রালয়ের বিভিন্ন নিয়মিত কাজ পরিচালনা করছেন অনলাইন ও বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে। সরকারি কর্মকর্তা ও নির্বাচনী এলাকাও ভিডিও মিটিং করে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি ও নূন্যতম কর্মকান্ড চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের সুফল হিসেবে।
-গোলাম দাস্তগীর তৌহিদ/২এপি/২০